লেবেল

সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০২০

অঙ্কুরীশা-র পাতায় প্রকাশিত অন্য ক্যানভাস-এর দুই বাংলার গল্প উৎসব "স্বল্প কথার গল্প।" (৩য় পর্ব)






অঙ্কুরীশা-র পাতায় অন্য ক্যানভাসএর  ২০ বছর উদযাপনের বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের চতুর্থ পর্বে চলছে দুই বাংলার অনলাইন গল্প উৎসব~"স্বল্প কথার গল্প'"।উদ্বোধক হিসেবে পেয়েছি স্বনামধন্য কথা সাহিত্যিক সম্মাননীয় তপন বন্দ্যোপাধ্যায় কে। বিশেষ অতিথি গল্পকার হিসেবে পেয়েছি সম্মাননীয়া মৌ মধুবন্তী এবং সপ্তদ্বীপা অধিকারী কে। আজ উৎসবের তৃতীয় দিনে আছেন দুই বাংলার দুই     বিশিষ্ট গল্পকার-শাহীন রেজা এবং মেঘনা রায়। আপনাদের সাদর আমন্ত্রণ। উৎসবটি উপভোগ করুন। আপনাদের লাইক ও কমেন্ট এ আমাদের এই চলার পথ সুদৃঢ় হোক,এই আশা রাখি।





  শুভেচ্ছান্তে--

  সিদ্ধার্থ সাঁতরা                      

সভাপতি,উৎসব কমিটি।

   বিশ্ব বন্দ্যোপাধ্যায়

  সম্পা,অন্য ক্যানভাস।

  যুগ্ম আহ্বায়ক: মিতালী ত্রিপাঠী ও রীতা বেরা।






আজিমন

শাহীন রেজা






আজান হচ্ছে। দ্রুত ওজুর জন্য পুকুরের দিকে ছুটলেন আজিমন বিবি। তাড়াতাড়ি তাড়াতাড়ি।  মাগরিবের ওয়াক্তের এই একটাই সমস্যা; সময় খুব কম। ঘাটের পাশে এসেই থমকে দাঁড়ালেন আজিমন, কি যেন একটা পড়ে আছে। আহা এতো সেই কুকুরের বাচ্চাটা। বিকালেওতো আর তিন সহোদরের সাথে খেলছিল। তিনি পাশে বসে পড়লেন। বাচ্চাটার গলায় আঘাতের দাগ। দগদগে।  রক্ত ঝরছে। এদিক ওদিক তাকালেন আজিমন। নাহ কাছে পিঠে কোনো কিছু নেই। এটা নিশ্চয়ই শিয়াল বা কোনো হিংস্র প্রাণীর কাজ। এদিকটায় এমনিতেই জঙ্গল। তার সাড়া পেয়ে বাচ্চাটাকে রেখেই পালিয়েছে। তিনি যত্নের সাথে বাচ্চাটা নিয়ে ঘরে ফিরলেন। দাওয়ায় শুইয়ে দিয়ে বাটিতে করে পানি তুলে ধরলেন মুখের কাছে। কিছুটা মুখে গেলো, কিছুটা গড়িয়ে পড়লো। তিনি দেখলেন, ঘাড়ের কাছে বেশ খানিকটা ক্ষত। অাজিমন বিবি দৌঁড়ে গেলেন হলুদ আনতে। পাটায় পিষে তা লাগাতে হবে ক্ষতস্থানে। বাচ্চাটা শ্বাস নিচ্ছে, তবে ধীরে ধীরে।  তিনি দ্রুত হলুদ পিষতে লাগলেন। এদিকে অন্ধকার নেমে এসে কখন যে ঢেকে দিয়েছে মাগরিব ওয়াক্ত, তিনি তা টেরও পেলেন না।





 কথা রাখেনি

 মেঘনা রায়






বনলতা মিত্র এবং তার স্বামী এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রী। কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স এর পর কী করা হবে এই চিন্তায়  উদ্বেগের ভার নিয়ে লাইনে  দাঁড়িয়ে।  হঠাৎ ভদ্রমহিলা ওনাদের পাসপোর্ট দুটি দিয়ে বললেন সব ঠিক আছে কিনা দেখতে।   ভদ্রলোক  নিজে থেকে বললেন "ইউ.কে.তে নেমতন্ন আছে।  "একটু অবাক হয়ে বলি "নেমতন্ন?"বনলতা মিত্র  বললেন " সারা জীবন ধরে ভূগোল পড়িয়েছেন।  সমস্ত প্রাক্তনীরা চিঠি লিখেছে "যে দিন  এই শহরে  পা দিয়েছি সেই দিন  আপনার কথা আর ভূগোলের কথা মনে পড়েছে । কবে আসছেন মিস?" ওরাই ব্যাবস্থা করবে। ওনারা শুধু টিকিট কেটেছেন। 

   ওনাদের ফেরার তারিখ অন্য দিন ছিল। আমি এরাইভাল স্টেয়ার কেসের সামনে ব্যস্ত হঠাৎ বনলতা দেবী কে সিঁড়িতে দেখা মাত্রই হাত তুললাম  ;কিন্তু উনি যেন চিনতেই পারলেন না!!ওনার পাংশু   মুখটা অস্বাভাবিক লাগছিল। জানতে চাইলাম মিঃ মিত্র আসেন নি?উনি কেঁদে  বললেন " হ্যাঁ অবশ্যই এসেছেন তবে কার্গো হিসেবে।  হিথরো এয়ারপোর্টে ওনাদের রিসিভ করতে কেউ আসেনি।  একাধিক ছাত্রী কথা দিয়েছিল, কথা রাখেনি।" এই শকে ভদ্রলোকের ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়।পরিজনহীন বিদেশের মাটিতে  উনি বনলতাদেবীর হাতেই  চির ঘুমের দেশে চলে যান।





1 টি মন্তব্য: