বিজ্ঞান সাধক প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের জন্মদিনঃ শ্রদ্ধা ও স্মরণে - বিমল মণ্ডল
বাঙালি তথা ভারতীয় বিজ্ঞান সাধকদের মধ্যে প্রফুল্লচন্দ্র রায় অর্থাৎ স্যার পিসি রায় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় তিনি ছিলেন একদিকে বৈজ্ঞানিক, অন্যদিকে দেশপ্রেমিক, শিক্ষক, সাহিত্যিক। সারা ভারতকে তিনি পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বের কাছে। ছাত্র হিসেবে তিনি খুব মেধাবী ছিলেন। তাই তিনি একেরপর এক ডিগ্রি লাভ করে পরে ডি.এস.সি উপাধি লাভ করেন।
প্রফুল্লচন্দ্র রায় দেশে ফিরে রসায়নের অধ্যাপক হিসেবে প্রেসিডেন্সি কলেজে যোগ দেন। পড়ানোর সাথে সাথে গবেষণার কাজও করেন। পরবর্তী কালে বিপরীত ধর্মী মার্কারি ও নাইট্রোজেনের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে আবিষ্কার করলেন মারকিউরাস নাইট্রাইট। এরপর তিনি বেশ কিছু নাইট্রাইট যৌগ আবিষ্কার করেন। এছাড়া চর্বি, মাখন, ঘি প্রভৃতি দ্রব্যের বিশুদ্ধতা পরীক্ষার রাসায়নিক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তবে তিনি বিজ্ঞান পিপাসু ছাত্রদের মধ্যে পেয়ে ছিলেন - মেঘনাদ সাহা, সত্যেন বসু, নীলরতন ধর , রসিকলাল দত্ত প্রমুখ। তাঁর অমূল্য সৃষ্টি "History of Hindu Chemistry "। এই গ্রন্থটির জন্য তিনি দেশ ও বিদেশ থেকে প্রশংসনীয় হয়ে ছিলেন। তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের সভাপতিও ছিলেন।
প্রফুল্লচন্দ্রের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা তাঁর বিভিন্ন কাজের মধ্যে রয়েছে।সেই কাজগুলোর মধ্যে যেমন রয়েছে -
১. কিশোর তরুণদের জন্য লেখেন " সরল প্রাণী বিজ্ঞান। "
২.ভারতের প্রথম রাসায়নিক দ্রব্য ও ঔষধ কারখানা " বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস " কারখানা স্থাপন করেন।
৩. তাঁর লেখা ' বাংলার অন্ন সমস্যা ',' হিন্দু রসায়নের ইতিহাস ', 'আয়ুর্বেদের প্রাচীনত্ব', 'বাংলা গদ্য সাহিত্যের ধারা ' প্রভৃতি বইতে তাঁর কৃতি ছড়িয়ে আছে।
প্রফুল্লচন্দ্র রায় শ্রেষ্ঠ রসায়নবিদ হয়েও সহজ, সরল আড়ম্বরহীন জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। বিশ্ববাসীর কাছে তিনি চিরবন্দনীয় হয়ে আজ অমরত্বের আসনে প্রতিষ্ঠিত।
আজ ২রা আগষ্ট। এই দিনটিতে বাঙালির বিজ্ঞান সাধক প্রফুল্লচন্দ্র রায় বর্তমান বাংলাদেশের খুলনা জেলায় রাতুলী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাই আজ এই জন্ম দিনে তাঁকে বিনম্র চিত্তে প্রণাম ও শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন