ক্ষুধা
যুদ্ধ চলছে,যুদ্ধ-
সমগ্র বিশ্বের মানুষের সাথে যুদ্ধ !
এ যুদ্ধের প্রতিপক্ষ প্রকৃতি !
এ কোন রাজ্য নিয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ নয়, নয় হানাহানি
এ এক নিশ্চুপ হৃদয়ক্ষয়ী, মস্তিস্ক বিভ্রাট, আর
অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ !
এ যুদ্ধে লাখো লাখো মানুষের প্রাণ হারিয়ে, আজ
প্রতিপক্ষের কাছে পরাজিত
ভয়ে কুঞ্চিত হয়ে ঢাল-তলোয়ার নামিয়ে নতজানু
হাটু গেড়ে বসে পড়েছে চরণে
তবু প্রকৃতির ক্রোধ না দমে !
যুদ্ধ মানেই তো ধ্বংস, দেশ জাতি বিকলাঙ্গ হয়ে পড়া
ক্ষুধার অভিশাপ !
না বুঝে মানুষ অদৃশ্যের সাথে চ্যালেঞ্জে জড়িত হয়
মেনে নেয়া প্রয়োজন, অদৃশ্য কখনোই পরাজিত হয় না !
তার এক চোখের চাহনি ম্লান করে দিতে পারে সারা সৃষ্টিকে !
বোধের চোখে বুকে যে আগুন জ্বলছে আজ, তা
নেভানোর কোন জল, কিংবা
ফায়ার এক্সটিংগুসার নেই মানুষের হাতে
কেবল মাত্র ধ্যানযোগই পারে
প্রতিপক্ষকে নমনীয় করতে
হায় স্রষ্টা, হায় প্রকৃতি, এবার না হয় থামো...
ক্ষমা করে দাও এই অসহায় নিরস্ত্র মানুষদের !
ভীরুতা ভাঙে
আসমান যখন আঁধারে ঘেরা
ছিলনা তখন নির্ভর আশ্রয়
আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ দেখিয়ে
দৈত্য দানব অন্ধকারে ডুবিয়ে দিলে নিমিষেই।
এখন ক্ষমাহীন ইন্দ্রিয় কুড়ে কুড়ে খায়
বহমান রক্তে উথাল পাথাল ঢেউ
ঢেউয়ে তোলপাড় চোখে রক্ত ঝড়ে
এঁকে দেয় অতীতের সুপ্ত কারুনকশা।
ভীরুতা ভেঙে ক্রমশ ছেড়ে যায় পদতল
এবার বৈধ স্বাধীনতা
নতুন দর্পণে প্রতিবিম্ব...
বাসনা
বিষাদের হাওয়ায় ভেসে যায় সুখ
তবু অতৃপ্ত সময়ের ফাঁকে
অঙ্কুরিত হয় নতুন স্বপ্ন, জাগে অন্যরকম মোহ !
হৃদয় আঁকে নতুন স্কেচ
ছড়িয়ে দেয় অজস্র গোলাপ পাপড়ি !
সুশোভন স্বপ্নগুলো সুবাসে ভরে যায়
অনন্তের আরতি আবার খুঁজে সেই প্রিয় মুখ !
যা কিছু অপূর্ণ অপ্রাপ্য, ভরে আছে ব্যর্থতায়
তারা রোজ রোজ করে খোঁজ সুখের হিমালয়
ভীরু চোখে হাত ছাপিয়ে স্মৃতির আঁড়ালে ঢাকে বেদনা !
প্রেম মানেই তো ব্যর্থ বাসনা !
হায় মানুষ
থমকে আছে পৃথিবী বন্ধ লেনাদেনা
বন্ধ প্রতিটি দুয়ার !
ভয়ে কুঞ্চিত আকাশ বাতাস মাটি জল,তবু
এখনো মানুষ লাগামহীন !
দেখে না শহরে নগরে গ্রামে গঞ্জে
প্রতিটি ঘর বাড়ি ইমারত কাঁপছে
ভয়ে থর থর কাঁপছে গাছের পাতা
প্রবল ভয় আর উদ্বিগ্নতায় কাঁপছে মানুষ
আর কতোটা অদৃশ্য শক্তির অনুভবে
তারা বিশ্বাস করবে অদৃশ্য স্রষ্টাকে
নাকি অস্বীকার অথবা অজ্ঞতা ?
যারা পৃথিবীকে গুড়িয়ে দিতে চায় নিমেষেই
মেনেছিলো স্রষ্টা বলে কিছু নেই
মৃত মানুষের দেহে দিতে চায় প্রাণ
তারাও তো আজ যুদ্ধে পরাজিত !
এ কোন রক্তক্ষয়ি যুদ্ধ নয় !
এ এক নিঃশব্দ যুদ্ধ !
কত পারমাণবিক রাসায়নিক বোমা মাটি হয়ে গেল
এই ক্ষুদ্র অনুজীবের দানবীয় থাবার কাছে !
কি নির্মম পরিহাস !
আজ কারো মৃত্যু হলে কেউ ছোব না
দেখবো না লাশের মুখ
আমি দেখবো না তোমাকে, তুমিও না আমাকে
যে ভয়ংকর ভাবে গ্রাস হচ্ছে মানুষ,ভয়
তিনি কখন যেন মুখিয়ে দেন গোটা সৃষ্টিকে
তাই আর কোন উগ্রতা নয় অধর্ম নয়
এ সময়ে স্রষ্টার প্রার্থনা ছাড়া
আর কিছুই হতে পারে না !
ক্ষত
একটি মায়াময়ী ক্ষত তৈরী হয়েছে আবৃত স্থানে
তাকে সংগোপনে লালন করছি নিয়ত
কি দুপুর, কি বিকেল, কিংবা রাত্রি
সযত্নে ধুয়ে মুছে মেখে রাখি সুরভি
শুনেছি ক্ষত পঁচে পঁচে দুর্গন্ধ আসে,অথচ
এটি তেমন ক্ষত নয়!
এর সুরভিতে আমি আন্দোলিত হই, হৃদয়ে স্বপ্ন জাগে
তার গোপন ব্যথার অশ্রুজলে
প্লাবিত হয় সাহারার বুক!
আমি চাইনা,এ ক্ষত মুছে যাক
যে সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে অন্তর্লোকে
জীবনকে করে শোভাময়
সে ক্ষত পদ্মপুঞ্জ হয়ে উঠুক, আরো গভীরে
এ পথচলা পথ,আরো দীর্ঘ হোক
প্রত্যাশার দীপ হাতে অনন্তের দিকে!
বিরহ বেলায় বলে যাবো
একদিন আমিও ভালোবেসেছিলাম!!
যেকোনো বিভাগে অপ্রকাশিত লেখা পাঠান।
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com
ক্ষত কবিতাটি আমার খুবই ভালো লেগেছে।
উত্তরমুছুন