মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০

নির্বাচিত কবিদের কবিতাগুচ্ছ


                                  গৌ রী পা ল 



  বৃষ্টি ভেজা দুপুরে 


বৃষ্টি ভেজা দুপুরে তুমি আসবে বলে
দাঁড়িয়ে আছি পথের ধারে
 একলা পথিক আমি,
শুধু তোমার অপেক্ষায়।
শুভ্র বসনে অপরূপ সাজে
 আসবে কাছে,
স্পর্শ করবে কোমল হাতে
তোমার সাথে হারিয়ে যাবো
দূর থেকে দুরান্তে অজানা পথে।
গোটা রাজপথ শুধুমাত্র আমাদের,
হাতে হাত রেখে ঘুরবো ফিরবো
মনের কথা বলবো তোমার সাথে।
ভয় আর নেই, নেই কোন লাজুকতা,
এই দিনটি হবে ভালোবাসার বন্ধনে গাঁথা।
পথের মাঝে তুমি যখন হাতটি ধর
তোমার দিকে চেয়ে থাকি
তুমি তখন মাথা নত কর।
তুমি লজ্জা পেয়ে মুচকি হেসে
লুকিয়ে ফেল নিজেকে।
আমি কাঁপা ঠোঁটে বলি তোমায়,
কাছে আসো... আমার
 স্পর্শে যখন চমকে উঠবে
 বুকে তোমায় জড়িয়ে নেবো।




   টাপুর টুপুর বৃষ্টি



নীল আকাশে পাখনা মেলে
মেঘেরা উড়ছে ওই
টাপুর টুপুর নূপুর পায়ে
বৃষ্টি মেয়ে কই ।

মেঘের আড়ালে লুকিয়ে আছে
বৃষ্টি মেয়ের  দেখা নাই
কোন আকাশে খুঁজলে পরে
টাপুর টুপুর বৃষ্টির দেখা পাই।

রামধনু রঙে রাঙিয়ে আকাশ
বৃষ্টি মেয়ের খুশির সীমা নাই
প্রেমের গন্ধে ব্যাকুল বাতাস
আজ দুজনে হারিয়ে যাই।

বৃষ্টি আজ খেলছে খেলা
লুকোচুরি খেলা ভাই
মেঘ আর রোদের সাথে
হবে আজ চিরকালের সই।

বৃষ্টি মেয়ের খুশির জোয়ারে
মুষলধারে বৃষ্টি নামে চোখে
ধরনীর সবুজ হয় আরো সবুজ
ভালোবাসা জড়িয়ে আছে চোখে।


    মা


তোমার আদর স্নেহ মায়া     
 মমতাএকটু ভালোবাসা,
মায়ের কোল ছিল আমাদের
 শান্তি সুখের বাসা।।

পাইনি কোন দিন তোমার
তাচ্ছিল্য অনাদর অবহেলা
যতই কষ্ট আসুক ছিল
শান্তির নীড় ছিল সুখের মেলা।

রক্ষা করতে  সব রকম বিপদ থেকে বলতে
 সবই ভগবানের ইচ্ছায় ঘটে।।
তুমি এ ও বলতে ভুল করে যারা
 তারা একদিন শাস্তি পাবে বটে।।

আমাদের মুখে হাসি দেখে
 ফুটতো তোমার মুখে হাসি,
তুমি মনে প্রানে বলতে আরে
 আমি তোদের ভালোবাসি।।

শিক্ষা দিতে তুমি কুপথে যাস না
একটু ভুলের জন্য বিপদের মুখে পড়তে হতে পারে।
যারা বিপদে পড়েছে তাঁরাই এক মাত্র জানে
অসৎ সঙ্গের ছোঁয়ায় মরন ডেকে আনতে পারে।।

মা গো আজ ভীষন মনে পড়ে
থাকতে পারি না আমি তোমার ছেড়ে।



  জীবন খাতার হিসাব নিকাশ

জীবন খাতার হিসাব নিকাশ  ডায়েরীর পাতায় যখন
চিতা যখন জ্বলবে অশ্রু ঝরাবে প্রিয়জন।।
চিরকাল থাকবে না কেউ একদিন হবে মরণ
জন্মিলে মরিতে হইবে এটাই স্বাভাবিক জীবন।।
জীবনের এই সংসার  পুতুল খেলার ঘর
জীবন মরনের মাঝে ভালোবাসা তাসের ঘর।।
একদিন সবাই কে যেতে শেষ বিচারের আদালতে
ফুল চন্দন দিয়ে সাজিয়ে নেবে শ্মশানেতে।।
সাঙ্গ হবে একদিন এই ভবের খেলা
সেই দিন আপনজনের কাছে হব অবহেলা।।
জীবন যখন ছিল আমার মূল্য ছিল না জানি
মরার পর হলাম আমি সবার কাছে দামী।।
শেষ হাসিটা হাসবো আমি বিদায় বেলাতে
কেউ বা কষ্ট পাবে কেউবা বিদায় দেবে আনন্দেতে।।



  শেষ বেলায় এসে পথচলা


আমার মৃত শরীরের উপর ফুলের তোড়া দিয়ে সাজিয়ে দিও না,
বিদায় বেলায় তোমার চোখের জলে আমার বুক ভিজিয়ে দিও না।

কষ্ট পেও না তুমি আমার জন্য হিয়ার মাঝে ব্যথা  লুকিয়ে রেখো না,
হাসি মুখে বিদায় দিও আমার সীমন্তিনী ভালোবেসে কাছে আর ডেকো না।

গোধূলি বেলায় এসে পথচলা যখন থেমে যাবে বাগানের ফুল গুলো ঝড়বে নীরবে,
ফুলের গন্ধে ব্যাকুল হৃদয় কাঁদবে সারাক্ষণ শুধু তোমার কথা ভেবে।

ভালোবেসে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি তোমার মাঝে তুমি চলে গেলে একলা ফেলে,
এখনো মনে হয় তুমি আছো আমার পাশে হাতে হাত রেখে রাগে অনুরাগে প্রেম সুধা ঢেলে।

ভালোবেসে তুমি বলছিলে যাবে না আমাকে ছেড়ে আমরা দুজনে একই সুতায় গাঁথা মালা,
সেই মালা ছিন্ন করে তুমি চলে গেলে ফুল চন্দনে রজনীগন্ধায় দিয়ে গেলে এক বুক জ্বালা।

যতদূর চোখ যায় দেখি তোমায় শেষ হলো সাঁঝের বেলার খেলা,
আমার জীবনটা এখন শূন্য মরুভূমি আমি ও দিন গুনি কবে সাঙ্গ হবে ভবের খেলা।



অপ্রকাশিত গদ্য ও পদ্য পাঠান
অভিমত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com      

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন