শুক্রবার, ১৯ জুন, ২০২০

নির্বাচিত অল্প স্বল্প গল্প





   হেল্পলেস

খোকার আঁকা 'হেল্পলেস ' ছবিটা শ্রেষ্ঠ চিত্রকর্মের সম্মান পেয়েছে ।তাই অভিনন্দনের জোয়ারে পার্টি মাতোয়ারা ,সবার হাতের কাঁচের গ্লাসের সোনালি তরল শেষ হওয়ার আগেই আবার মুহূর্তেই ভ'রে যাচ্ছে । আশি বছরের দুটি রাতজাগা অসহায় চোখ কয়েকমাস আগে খালি হয়ে যাওয়া ঔষধের বাক্সটার দিকে তাকিয়ে ভাবে, ঐ বাতিল হওয়া বাক্সটা কবে আবার ঔষধে ভ'রবে ... ।


অলংকরণ- বিমল মণ্ডল  




    বন্ধ্যা

বিয়ের দু' মাসের মধ্যেই বিধবা রমিতা ফিরেছিল বাপের বাড়ি ।আজ ছোটবোন ঈশিতার সাধের আয়োজন যখন সে করছিল, পিসিমা বললেন, বন্ধ্যা মেয়েমানুষের সাধের আয়োজনে থাকতে নেই । স্থির রমিতার হৃদয়ে ভাসতে থাকে সেই বাচ্চাটির মুখ ... যে ভুল করে বিয়ের আগে রমিতার কোলে এসেছিল ... জন্মানোর পরেই যাকে এক NGOর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল ... ।


অলংকরণ- বিমল মণ্ডল  



     পিতৃস্নেহ

তিয়াসের মা মারা যাওয়ার এক বছরের মধ্যে রতনবাবু আবার বিয়ে করলেন । দ্বিতীয়পক্ষের স্ত্রীকে হসপিটালে নিয়ে গিয়ে একটা অপারেশনে চিরবন্ধ্যা করে আনলেন, যাতে ভবিষ্যতে এই সংসারে অন্য কোনো শিশুর আগমনে তার তিয়াসের কোনো অযত্ন না হয়। দেখেশুনে ভোলার মা ঘর মুছতে মুছতে ভাবে,'' বাবু তো ভোলারও বাবা, তবু শুধু তিয়াসকেই যত্ন করেন।''



অলংকরণ-বিমল মণ্ডল  



   নৈবেদ্য


অন্ন,পঞ্চব্যঞ্জন,পরমান্ন, ফল,মিষ্টি সাজিয়ে দেবতাকে ভোগ নিবেদনের জন্য মন্দিরের গর্ভগৃহে যাচ্ছিল সাধুচরণ।হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল মন্দিরের চাতালে, হাত থেকে মাটিতে ছড়িয়ে পড়ল ভোগ-সামগ্রী।
মাটিতে পড়া নৈবেদ্য দেবতাকে নিবেদন করা যায় না ... ফেলে দেওয়া হল সব। কাঙালের দল তা কুড়িয়ে খেল। দেবতা স্বর্গে বসে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেন ।


অলংকরণ-বিমল মণ্ডল  



   বাসা

করোনা রোজগার কেড়ে নিয়েছে, আমফান ঘরটা কেড়ে নিল। এর মধ্যে মন্টুটা আবার কোথায় গেল? প্রতিমা ছেলেকে খুঁজতে খুঁজতে দেখে ভাঙাঘরের একপাশে দশ বছরের মন্টু খড়-কাঠি-কাপড়ের টুকরো নিয়ে খেলা করছে । প্রতিমাকে বলে, '' দেখো মা, ঝড়ে বটগাছটা পড়ে গিয়ে পাখিগুলোর বাসা ভেঙে গেছে ... ওরা থাকবে কোথায় ... তাই ওদের বাসা বানাচ্ছি... ।








অপ্রকাশিত গদ্য ও পদ্য লিখে পাঠান
মতামত জানান
        bimalmondalpoet@gmail. com         
'







'

৪টি মন্তব্য: