পাপড়ি ভট্টাচার্য
প্রার্থনা
ক্রমে নেমে আসছে অন্ধকার ,বিপর্যয়
জনজীবনে বোধোদয় হোক এই সময় প্রার্থনায়।
সামনে ভাসছে মৃত্যুর গন্ধের কোলাজ
মিশে যাচ্ছে ভেদাভেদ টুপটুপ ।
যাকে চিনিনা জানিনা অথচ সতর্ক প্রহরায়
দিন রাত্রি একাকার,শরীরের ফুসফুস অসহায়
সর্বশক্তি দিয়ে তার প্রাণঘাতী শেকড়
উপড়ানো যাচ্ছেনা।
মিঠে জল ,নোনা জল কোনো জলই বইছেনা
শুধু স্বর্গ মর্ত পাতাল এক হয়ে কর প্রার্থনা
ঐ অদেখা অক্টোপাস হোক ম্যানগ্রোভ,
মৃত্তিকার গর্ভ শুদ্ধ হোক
লক্ষ কোটি জীবাণুর পলি সরিয়ে ।
রাধাআলো
মাঘ পঞ্চমীর শ্যাম অন্ধকারে
অনেক পথ হেঁটেছো
রাধা আলো জ্বেলে,
আজও চলা থামেনি
শুধু বদলে গেছে দিন
প্রজাপতির ডানায় রোদ্দুর মেখে
আদিম খেলা ভেঙে উড়ে গেছে ভ্রমর,
বিষাদ সিন্ধুর ওপার থেকে উড়ন্ত পাখি
নিজের ছায়া দেখেনা জলের আয়নায়
সেখানে মিশে যায় কৃষ্ণচূড়ার লাল
ফিরে ফিরে আসে অভিসার স্মৃতি
অন্ধকারের জোনাক বুটি সেই শিল্প
আঁকা থাকে কৃষ্ণ অঙ্গে।
বন্ধুত্ব
একসময় ভেবেছি সব হারিয়েছি
সে সব হারানো না ফিরলেও
বিন্দু থেকে বিন্দুতে মিশে গেছি
যেমন রেণুকণা তার রসোমগ্ন উত্তরণ থেকে
পাপড়িতে রং ছড়ায়
তেমনি
আলাদা হবার যতটুকু যো
হাস্যকর, ঘাটে না আঘাটে
পাত্রে না অপাত্রে
হোঁচট, নাকি টাল খাওয়া
কে বলে দেবে—
তির তির জলে আমার নৌকো ভাসছে
সওয়ারি তুলবো না,একা যাবো।
মানুষ
আমার অফুরন্ত চাহিদা যা পুরণ হবার নয়
সে শুধু বেড়ে যায়,বেড়েই যায়
নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করি প্রতিদিন
প্রতিমুহূর্তে একটা অন্য মানুষ জন্ম নেয়
ইচ্ছে পুরণের লক্ষ্যে সে অনড় অটল।
বার বার তিন ঘোড়াকে লাগাম দিই
ভুল গন্তব্য চিনে নিয়ে সক্ষম হতে,
এত বড় পৃথিবীতে পথভ্রষ্ট হলে
প্রলোভন আঁকড়ে ধরবেই।
সন্মোহনের দুই চোখ থেকে
বেরিয়ে যেতে পারলেই আমি মানুষ
চিনে নিতে পারব প্রকৃত জীবন।
অধরা
তোকে যারা ভালবাসি বলে কাছে আসে
তোকে যারা স্বপ্নে দেখি এই মিথ্যে বলে
তোকে যারা বৃষ্টি রোদ্দুরে নিয়ে আসে নন্দনে
বল তুই কতটা ভিজিস প্রলেপের চন্দনে?
যাদের বুক পকেটে লেপ্টে থাকিস ঠান্ডা ঘরে
যাদের যন্ত্রণার রক্তফোঁটা অক্ষরে ভাসে
সত্যিই কি তোকে তারা সত্যি ভালবাসে ?
প্রাত্যহিক মালিন্য থেকে অধরা হয়ে তুই
বার বার চাঁদ হ খোলা আসমানে।
লেখা পাঠান
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন