।।প্রতিদিন বিভাগ।।
।। জুন সংখ্যা।।
।। বিষয় - মুক্ত (গুচ্ছ কবিতা) -১৫।।
অলোক চট্টোপাধ্যায় -র কবিতা
১.
ক্রীড়াণক
কে তোমার হাতে তুলে দিল কালান্তক শরধনু?
কে তোমার রক্তে বুনে দিল
নিষ্ঠুরতা – ধর্ষকাম বীজ?
মাথার ওপরে পূর্ণচাঁদ = সেই লক্ষ্যে ছুঁড়ে দাও
অভ্রান্ত নিশানা।
আকাশ আশ্রয় থেকে
ঝরে পড়ে বনহংসী তির বেঁধা বুকে।
ডানায় রক্তের ছোপ, তোমার দু হাত রক্তে ভেজা।
কে তোমায় অদৃশ্য সুতোর টানে ঘাতক বানায়?
তারপর দিন অবসানে
ক্লান্ত অতৃপ্ত তুমি এসে বসো ঘাটের কিনারে।
করুণ অঞ্জলি ভরে জল নাও
পিপাসা মেটেনা।
জলের আয়নায় ভাসে মুখ। ঈষৎ অচেনা।
গভীর ঘোরের মধ্যে জেনে যাও ঠিক
এ তোমার অন্তিম শিকার।
২.
প্রত্যয়
শেষতম ম্লান আলোটুকু
করপুটে ঢেকে রেখে চলে যাই অনন্তের দিকে।
হাতের তালুতে টের পাই
নিভে আসা আগুনের অন্তিম উত্তাপ।
যত মায়া আমার সঞ্চয়ে
তারো কিছু বেশি যেন পাই বিনিময়ে।
সেইটুকু প্রত্যর্পণে ভরে ওঠে শ্বাস।
অন্ধকার এখনও পায়নি তার আকাঙ্খিত জয়।
৩.
সমাপ্তি
যা কিছু ভাঙার ছিল সবটুকু ভেঙ্গেছো প্রলয়?
অভ্রংলিহ অহংকার খচিত স্থাপত্য কলা, গর্বভারে স্তম্ভিত মিনার?
যা সব হারানো বড় কঠিন পরীক্ষা ছিল, গূঢ় আত্মরতি।
এখনো অনেক তবু বাকি আছে নিঃসঙ্গ গমনে।
যা কিছু ভোলার ছিল তার সব ভুলেছো অলীক?
শ্মশান যাপন শেষে অস্থি বিসর্জন করে ফিরেছো কি নিবিড় নির্বেদে?
অথবা এখনও
বিবিক্ত সঞ্চয় নিয়ে বসে আছো তমসার তীরে।
যা কিছু ফুরোলো তার ভস্মশেষ নিয়ে
এখনো কি জাগো অনিঃশেষ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন