মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২

প্রকাশিত হল..., অঙ্কুরীশা-র পাতায় সুর নক্ষত্র বাপ্পি লাহিড়ী শ্রদ্ধাঞ্জলি কবিতা সংখ্যা।। Ankurisha।। E.Magazine।। Bengali poem in literature।।




কলমে-

সৌহার্দ সিরাজ
সমাজ বসু 
সজল বন্দ্যোপাধ্যায়
রবীন বসু
অমিত কাশ‍্যপ
সঞ্জয় রায়
মৃত্যুঞ্জয় হালদার
দেবপ্রসাদ জানা
বিদ্যুৎ মিশ্র
শ্রাবণী বসু
মালা মিত্র 
প্রেমাংশু শ্রাবণ
শিখা ঘোষ
সমুদ্র শাহরিয়ার
তাপস কুমার চট্টরাজ
বিকাশ বর
সুজন দাশ
সন্দীপ সাহু
জুলি লাহিড়ী
ত্রিপর্ণা ঘোষ 
বহ্নি শিখা (ঊষা দত্ত)
ইউসুফ মোল্লা 
কেতকীপ্রসাদ রায় 

















ডিস্কো ড্যান্সার
সৌহার্দ সিরাজ



ঘোর ঘোর মাঘের সকাল ডুকরে উঠলো
এক ঝটকায় ঠাণ্ডা যেন আরও দশ ডিগ্রি
নেমে গেল নিচে
আমাদের আদরের ছেলে অলোকেশ শেষবারের মতো
নড়ে উঠে থেমে গেল।

যে সব পাখিরা স্বাধীন পালকে উড়ে
আকাশ ছুঁয়ে দেওয়ার আয়োজন করছিল
তারা আর্তনাদে ভরিয়ে তুলল বাতাস
ভারতের ভরকেন্দ্র থেকে ছড়িয়ে পড়া দুঃসংবাদে
পিতৃভূমি বাংলাদেশের পাবনার প্রাণ আকুল হলো কেঁদে
চঞ্চল রাজপথ,ম্রিয়মান যমুনা স্তব্দ হলো

ছোট্ট যাদু অলোকেশ ; আদরের আতিশয্যে
একদা যার নাম হয়েছিল বাপ্পা
সরল বাংলার মেধাবী মনন;ডিস্কো ডান্সার হয়ে
বর্ণাঢ্য বুম্বাইকে সাজিয়ে দিল নতুন মোড়কে

ভারতীয় সংগীতের হে অমর সঙ্গী!
বাংলার দুর্বাঘাসের ডগায় জেগে থাকা শিশিরের বুকে
সূর্য লিখে গেছে তোমার নাম...




ও শোনো পাখি...
সমাজ বসু

আকাশপ্রদীপ সন্ধ্যাতারা
একে একে ডুব দিল অন্ধকারে---
একরাশ গাঢ় অন্ধকার জড়ানো কুলুঙ্গিতে জ্বলছিল
মঙ্গলদীপ--- 
দুচোখ ভ'রে ছিল আলোর ঠিকানা। 
অথচ সন্ধ্যের আগেই কি এক হাওয়ায় 
নিঃস্ব আজ মঙ্গলদীপের শিখা--- 

আর সকাল নেই---
ও শোনো পাখি,ইমন বলো বসন্ত বলো
তুমি ফিরে যাও,গান আর ভাল লাগে না।


একতারা
সজল বন্দ্যোপাধ্যায়

যারা আগুন জ্বেলে পোহায় শোক
হয়তো আমি তাদের সাথেই আছি
যারা বৃষ্টিতে ভিজে করে সুখভোগ
আছি আমি তাদের কাছাকাছি।

যারা কাঁদতে শেখেনি কোনোদিন
শুধু হেসে কাটিয়েছে চিরকাল
আমাকে তারা কি নেবে না দলে
উজান হাওয়ায় ওড়াবে না পাল!

চলে যাওয়া রাত যদি ফেরে আর
কাজলের কালো ভরে নেবে আঁখি
খসা তারা আর ফিরবে না জানি
চলে যাওয়া ভোর দিয়ে যায় ফাঁকি!





বাপ্পি লাহিড়ী : সুনীল আকাশ

রবীন বসু


যাঁর মায়ের নাম বাঁশরী, তিনি তো গান গাইবেন-ই।

কণ্ঠে সুর ঝরে, মুখে হাসি

তিনি আমাদের বাপ্পি লাহিড়ী।

হিন্দী গানে বাঙালির সুর, গলা সে তো ইতিহাস

ভারতবর্ষ মান্যতা দেয় তাকে; 

বিশ্বমাঝে বেজে ওঠে সুর-সিম্ফনি অলোকেশের কণ্ঠে।

কনক শোভার দ্যুতি ভালোবেসেছিলে,

উদাত্ত গলার গান জয় করেছিল মানুষের মন;

ভেজালহীন সরল আর নিপাট মানুষ তুমি।

রয়ে গেল তোমার অগণিত গান 

ডিস্কো ঠেকে বারে প্রান্তরে, সীমাহীন আকাশের নীলে।






শ্রদ্ধাঞ্জলি 
অমিত কাশ‍্যপ

ছোটবেলার আনন্দ যে কোথা দিয়ে ঘিরে ধরত
আমরা চোর চোর, কানামাছি, কুমিরডাঙা ছেড়ে যখন 
ফুটবল ক্রিকেটে মন দিয়েছি প্রবলভাবে
যখন হাফপ‍্যান্ট আর ফুলপ‍্যান্টে টানাটানি চলছে 
বাপ্পিদা এসে দাঁড়িয়ে গেলেন মাঝে 
পুজো প‍্যান্ডেল আর বিজয়া সম্মিলনীর লোক ডাকা 
বাপ্পিদার কণ্ঠ, চলতে চলতে মেরে যে গীত অথবা 
কভি আলভিদা না কাহেনা মাইক্রোফোনে বেজে যাওয়া 

সেই বাপ্পিদা হঠাৎ নিশ্চুপ হলেন, এটাই নিয়ম
একদিন তো চুপ করতেই হয় 
তবুও বাপ্পিদা অমর থাকবেন স্মৃতিতে অম্লান
আনন্দ অনুষ্ঠানে বেজে উঠবে হঠাৎই ইয়াদ রাখ না





বাপি লাহিড়ী
সঞ্জয় রায়

যে সফর পায়ের পাতায় যেতে যেতে মনে রেখো
বিদায়ের সুর নেই জেনো
সুর আছে গহনা জড়ানো।
কখনো বিদায় নয় আবাহনে পেয়েছি জীবন
সুর যদি উচ্চকিত তাতেও নির্জন
অববাহিকায় স্রোত পলির ভেতরে
সম্মোহনে থাকো।
সুরের তরঙ্গে করো স্নান।

অলকেশ কফি খাও
যেখানে যাবার যাও তবে তার আগে বাজ গীটারের সুরে গেয়ে ফেলো কালজয়ী গান।





বাপ্পিদা
মৃত্যুঞ্জয় হালদার

কালো সানগ্লাসে আর
গলায় সোনার চেন
আমাদের বাপ্পিদা
গান গাইছেন।

গীতিকার সুরকার
শিল্পী যে মহান
মন প্রাণ ভরে যায়
শুনলে তার গান।

তিনি আজ নেই আর
আমাদের মাঝে
সুরে সুরে রয়েছেন
ভক্ত সমাজে।



স্বর্ণস্বর্গ প্রাপ্তি
দেবপ্রসাদ জানা

মরণে মেলেনি ছুটি,আরো আছে গান।
জীবন্ত গানের ছোঁয়া,আজো লেগে আছে।
কায়াহীন ছায়ারাও,দিয়ে গেছে প্রাণ।
অশরীরী গায়কেরা,এক হয়ে গেছে।

কালের কোকিল কন্ঠ,গেলে রুদ্ধ করে।
হে সুরের কারিগর লতা সন্ধ্যা বাপি।
ছেড়ে গেলে স্বর্ণস্বর্গে হাতে হাত ধরে।
উল্লসিত ইন্দ্রপুরী,সারারাত্র ব্যাপি।

আকাশের ময়দানে,নেমে পড়ো সব।
সুরের পসরা নিয়ে, দেবদেবী সনে।
সুরের ঝংকারে ওঠে,নতুন বিপ্লব।
সুর তাল লয় মিলে,কলকন্ঠ তানে। 

কর্ণ কন্ঠ বাদ্যযন্ত্রে,মধুর মিলন।
একেএকে সব গেল,এতই আপন।



গোল্ডেন বয়
বিদ্যুৎ মিশ্র

ডিস্কো ড্যান্সে আসর মাতান
শব্দ তুলে ঝংকারে
বলতে পারিস সুরের মালিক
বাপি লাহিড়ি কন তারে।

কতো শত গানের কলি
আজও যখন কানে বাজে
মন ভরে যায় মিঠেল সুরে
নতুন করে আবার সাজে।

ছোট বড়ো সর্বজনের
মনের ঘরে বসত করে
সেই বাঙালী গোল্ডেন বয়
দৃঢ়ভাবে প্রত্যেক ঘরে।

হঠাৎ করে গানের আসর
ছেড়ে গেলেন নিরুদ্দেশে
তবু তাঁকে পাই খুঁজে রোজ
সকাল সাঁঝে গানের দেশে।




বাপি লাহিড়ীর প্রতি শ্রদ্ধা-স্মরণ
শ্রাবণী বসু

রক্তে সবার ছুটিয়ে ছিলেন ঘোড়া,
দাপিয়েছিল পাগলপারা সুর,
 সম থেকে সম আকাশছোঁয়া নেশা ,
আশির দশক মারিজুয়ানায় চুর।

বাপি লাহিড়ীর নামটি ডিস্কো কিং,
স্বাদ বদলের জোয়ার আনা তুফান,
টলি, বলি সব সুপার-ডুপার হিট
গানভাসি দিন সবই সুরের আফিম।

বৃষ্টি আকাশ সঘন সঞ্চারী-
তাপিত বুকেতে তৃষ্ণার জলধারা,
সংগীত যেন মরমিয়া সেই সুর,
শম-উপশম খুশিতে আত্মহারা।

ওই মানুষটি বাণ ডেকেছিল দেশে,
খরার পরেতে সরস আশীর্বাদ,
জীবনখাতার স্বরলিপিগুলি ওড়ে
অবেলায় এলো মৃত্যুর সংবাদ।

মহাকালের নির্দেশ খুবই কড়া,
দরজা ঠেলে যেতেই হয় ফিরে,
সৃষ্টিকে ঘিরে বাঁচতে হবে এখন,
বিদায় জানাতে ভাসছি অশ্রুনীরে ।





স্মরণে বাপ্পীদা
মালা মিত্র 

অপরেশ বাঁশরীর সুরে সুরে তুমি  এলে,
'গুরু' সে সুর মজালে বিশ্বময়।
'চলতে চলতে' বুঝিয়ে ছিলে,
সবি 'নজর কো তেরা ইন্তেজার হ্যায়'।
'বোম্বাই সে আয়া মেরা দোস্ত' এ দোস্তি শেখালে।
হে বন্ধু!'চলতে চলতে মেরে ইয়ে গীত কো ইয়াদ রাখনা'
ইয়াদ তো তোমায় আকাশ বাতাস করছে,
জানি,'চার দিনকি জীন্দগী হ্যায়'
তবু চোখের পাতা আজ ভারি।
'তুমহীনে প্যার মাঙ্গা হ্যায়'
আমরা তো তোমায় ভালবাসী বাপ্পী দা!
আজ তুমি নেই ভাবতেই মনে হয়,
'জিন্দগী এক জুয়া হ্যায়'।
বাপ্পীদা আমরা 'প্যার মাঙ্গা হ্যায় তুমহী সে 
না ইনকার করো'।
আজ' জখমী 'দিলসে বহত ইয়াদ আ রাহা হ্যায়'!
তোমার স্বর্ণময় অস্তিত্ব!
হাজার সালাম প্রণাম শ্রদ্ধায় বলি,
বাপ্পীদা অমর রহে!





স্মৃতির অনন্ত আলোড়নে
প্রেমাংশু শ্রাবণ

সূর্যের বেতাল রাগে কোনও কোনও দিন
তোমার ঠোঁটের মোমে যে সব প্রহর গলে রাস্তা হয়ে যায়
আমি সেখানেই ঋণী থাকি চলমান বাসের দূরত্বে।

একদা সাঁতার ভুলে কতদিন আঁচড় কেটেছি ঘাসের নরম রোদে-হেঁটে গেছি মাঠ পেরিয়ে
তুমি কি ভুলেছো সেই কিশোরের কথা--
যে কিশোর শ্যাওলার মেধা নিয়ে
বৃষ্টির ধূসরে মিশে একদা বিলিয়েছিলো আষাঢ়ের ঝমঝম রঙ?
ভুলেছো কি স্তুপের কুমারী বাসা আর সেই কিশোরের প্রথম উড়ান?

আমি জানি,জোয়ারের মোহজল পৃথকে গড়িয়ে নেমে গেলে
পুরনো চিঠির বুকে কীভাবে নৈঃশব্দ হাসে
কীভাবে ফুরিয়ে যায় সিঁড়ির হাতল।
আমি তবু আজও ঋণী স্মৃতির অনন্ত আলোড়নে।





অলকেশের উজ্বলতা
শিখা ঘোষ

আসমুদ্র হিমাচল নেচে উঠতো তাঁর সুরে
  অলকেশ , বাপ্পী লাহিড়ী,
নিজকণ্ঠের সপ্তসুর যেন উৎসারিত রংমশাল,
  যার রঙ অনায়াসেই ছড়িয়ে যেত---
        নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রান্তরে।
সুরের যাদুকর-সার্থকনামা  সেই উজ্জ্বল নক্ষত্র
  সঙ্গীত জগত ভরিয়ে দিলেন সুরে গানে।
        ঘটে গেল সেই নক্ষত্র পতন--
চিরঘুমের দেশে আজ  "ডিস্কো ড্যান্সার"
  রয়ে গেল শুধু তাঁর সুর লহর।

দেশে বিদেশে নন্দিত তোমার নাম---
নাও আমাদের শতকোটি প্রণাম।





গানের কথা এলে
সমুদ্র শাহরিয়ার



মান বুঝি না মন বুঝি
গানের কথা এলে প্রথম বাপ্পীদাকে খুঁজি।

সবার ছিল ভয়
বোম্বে শহর দখল করা সহজ কথা নয়।

তবু বাপ্পা বাপ্পী হয়ে  বাড়িয়ে দিলো হাত
প্রথম রাতেই সব ব্যঙাচি হলো কুপোকাত।

ভারত কাঁদে বাংলা কাঁদে
দুঃখের বোঝা নিয়ে কাঁধে,
হায় রে অলোকেশ!
আমাদের সব আশা কি শেষ!

পাবনা জেলার লাহিড়ী পাড়ায় শোকের বাতাস  ঘুরছে
সবাই মনের আগুনে পুড়ছে।




অমর সঙ্গীর খোঁজে
 বিকাশ বর

পড়ে রইল খুলে পড়া আভরণ
ঘর ভর্তি নাম না জানা বাদ্যযন্ত্র
বসন্ত সকালে থেমে গেল ডিস্কোড্যান্স
অলবিদা জানাবে না বলেও
চলে গেলে নিরুদ্দেশের দেশে
যত কথা, যত সুর বাতাসের ভাঁজে
সাত সমুদ্রের তরঙ্গে ছন্দময় সুর
আশা-ভালোবাসার দেশে তোমার গুরুদক্ষিণা।
ঘুমের ভিতর এক অনন্ত যাত্রায়
জানিয়ে গেলে পূর্বাভাস ছাড়াই
সমুদ্রতট ভেসে যেতে পারে
হয়তো অভিমান ছিল, হয়তো নীরবতা
হয়তো বা সন্তাপ ছিল বুক ভরে
তাই কী এই চলে যাওয়া অমরসঙ্গীর খোঁজে!




আলবিদা 
তাপস কুমার চট্টরাজ

আবছা স্মৃতিতে ভেসে আসছে
তবলার বোল,
মায়ের কোলের কাছে বসে
বাজিয়ে যাচ্ছে , বাবার গান
প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে
ছেলেটা নিমগ্ন হয়ে গেছে
লয়, মাত্রার সঙ্গে।
তখন বয়স কতই বা
দশ কি এগারো।
আমার তখন সবে আট
বাবা গাইছেন লাইন লাগাও -- লাইন লাগাও 
ছেলে তবলাতে ।
তারপর
জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতা
হয়ে মুম্বাই কাঁপছে থরথর সঙ্গীতের জ্বরে।
"চলতে চলতে, মেরে ইয়ে গীত
ইয়াদ রাখনা, কভি আলবিদা না কহনা"
কভি আলবিদা না কহনা।"
যাবে যাও , আলবিদা না কহনা ।




সুরের আকাশে 
সুজন দাশ

মৃত্যু তোমায় নিক না কেড়ে কর্ম তোমায় রাখবে ধরে,
বাঁচবে তুমি সুরের মাঝে সব মানুষের হৃদয় ঘরে।
আলো হয়ে ভাসবে সেই সুর যুগ থেকে  যুগ কালে কালে,
ঘ্রাণ ছড়াবে ফুল হয়ে তা থাকবে ফুটে সুরের ডালে।

বাংলা হতে বাপ্পি তুমি অল ইন্ডিয়ার শিল্পী হলে,
ডিসকো তালে মাতিয়ে সবে আপন আলোয় উঠলে জ্বলে।
গড়ে ছিলে বিশ্ব রেকর্ড বেশি গানের রেকর্ড করে,
আজন্মকাল ঢেউ তুলেছ নিজের মত সুর সাগরে।

নিজস্বতার সেই সুর যেন ভিন্নতার এক বুলায় পরশ,
জাত চেনালে নিজের তুমি আলাদা তার পাই খুঁজে রস।
সুরের আকাশ আলো করে জ্বলবে হয়ে ধ্রুবতারা,
টিকে থাকুক অনন্তকাল তোমার দেয়া সুরের ধারা।




ভালোবাসি তোমায়
সন্দীপ সাহু

প্রেম ধ্যান হয়ে,
বসে ঠিক হৃদ-ঝরনার নীচে!
ঝরনা ধ্যান ধুয়ে মধ্যগতি
নিম্নগতিতে বয়ে চলে 
রয়ে রয়ে মোহনার দিকে।

মোহনায় তুমি নেই! রেখে গেছো
স্মৃতির চাপে ফসিল হওয়া 
বিবর্ণ গোলাপের পাপড়িগুলি!
ধ্যান-জলে আবার লাল হয়ে যায়!
পাপড়িগুলি আবার জোড়ো লাগে!

হৃদে লালন করি ওমে!
নিভৃতে প্রতিদিন তুমি এসে 
লাল গোলাপে চুম্বন রেখে যাও!





শ্রদ্ধাঞ্জলি
জুলি লাহিড়ী

'বাপ্পি লাহিড়ী' তুমি সবার প্রিয় গানের অলংকার
তোমার সুরে সুরে চিরদিন মনে বাজবে ঝংকার
শূন্য ঘরে আর হয়না এখন গানের আয়োজন
রাত্রি ভেজা অন্ধকারে তাই তো কাঁদে মন
মঙ্গলদীপ জ্বলে আকাশে লক্ষ তারার পাশে 
তোমার কন্ঠ তোমার সুর হাওয়ার স্রোতে ভাসে 
মেঘের পরে মেঘ সরে যায় দিনের পরে দিন
গান শুনছি যত বাড়ছে ততো তোমার কাছে ঋণ ।





হৃদয়ে তোমার নাম
ত্রিপর্ণা ঘোষ 

বহু নিদ্রাহীন রাত কেটে গেছে শুধু সুরের ঠিকানা খুঁজতে।
চুম্বকের মতো আকর্ষণ করেছে সঙ্গীত মঞ্চ।
ফিরে আসবে না আর সেই স্বপ্নের রাত্রি।

এক টুকরো গান শুধু সম্বল হয়েছে কত কালবৈশাখীর পরে।
এই কালবৈশাখী এক মুহূর্তে যখন ভেঙে দেয় বেঁচে থাকার শেষ সম্বল,
নিদ্রাহীন রাত খোঁজে শুধু নিকোটিনের ধোঁয়া,
পুরানো টেপ রেকর্ড তখন আবারও বেজে ওঠে,
মনে করিয়ে যায় সেই গান হারায়নি কোনোদিনই;
কারন সে নাম লেখা আছে হৃদয়ে।




চাতক নয়নে
বহ্নি শিখা (ঊষা দত্ত)


গানে গানে, সুরে সুরে জেনেছিলো,
তোমায় যৌবন,
প্রেমে অপ্রেমে, ভালবাসা বিরহে
সবার জীবন,
কত সুর কত গান,আজো বাজে
হৃদয়ের মাঝে,
কন্ঠে তোমার  প্রেমিক কণ্ঠ সাধে 
বিরহের সাজে,
গেয়ে যায় প্রেমে, ওই পদাবলী 
 শেষের বেলায় , 
বলো,কোন অভিমানে ছেড়ে  গেলে তুমি অবেলায়,
তবু দেখো তুমি আছো, কণ্ঠে  কণ্ঠে,
সুরের ভুবনে,
অনুভবে দেখি তোমায় ইচ্ছে বেলায়
চাতক নয়নে। 
বাপি দা যেখানে থাকো  ভালো থেকো, হৃদয়ে সবার,
পরম আদরে বাজিও তোমার 
সোনালি  গিটার।




অলোকেশ বাড়ি আছো
ইউসুফ মোল্লা

অলোকেশ বাড়ি আছো? 
তোমার কন্ঠ শুনতে এক পাখি এসেছে, 
তার নাম কোকিল। 
তুমি কোথা থেকে এতো সুর পেলে? 
কেমন করে গাও, সেসব গান! 
এসব জানতে এসেছে, আরো কতশত পাখি। 
যে টিয়াটি সবে মিঠু মিঠু স্বরে কথা বলতে শিখেছে, 
সেও গান করতে চায়, গান শিখতে চায়। 
তুমি এদের গান শেখাবে, মিষ্টি সুরের গান? 

আজ ওঘরের ভেতর থেকে কোনো আওয়াজ আসে না! 
তাহলে কি অভিমান করে কথা বলতে চায় না? 
আমরা কি ফিরে যাবো ওই বনে? 
যেখানে বুনো বুলি ছাড়া আর কিছু নেই। 
আমরা কি তাহলে ভুলে যাবো আমাদের সুর! 
যদি কখনো ফিরে আসো, দিয়ে যেও তোমার সুর ।






সেতু 
কেতকীপ্রসাদ রায় 


দরজা খুলতেই উৎসাহী দর্শনার্থীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বিগ্রহের উপর ;
রথের রশি স্পর্শে পাপ খন্ডাতে এগিয়ে আসে অসংখ্য হাত,
আকুতি ভরা হাতের আঙুলগুলোর ভাষা স্পষ্ট অনুভব করা যায়।
আলো আঁধারির উদ্ভাসিত আলোর ঝর্ণাধারায় স্পষ্ট হয় বিগ্রহের স্বরূপ;
উতসারিত আলোয় ঝলমল করে বিগ্রহের মধ্যেই লুকিয়ে থাকা সত্যের সন্ধান।

সম্ভব হলে ওই সব দর্শনার্থীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিড়ে খেতে চায়-
নাদির শাহের মত বিগ্রেহের বর্ণজ্জ্বল গৌরব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ লুট করতে চায়,
চোখ মুখ আর দানবীয় আঙুলগুলো জয়ের উন্মাদনায় নৃত্য করে;
একাত্মবাদ ঈশ্বরতো কখনও এমনটা চাননি!
কথা ছিল প্রশান্তির বাতাবরণে নেমে আসবে বুদ্ধের বাণী।
অথচ সিংহনিনাদে হুঙ্কার দেয় অহঙ্কারী রাবণের দাম্ভিকতায়।

এখন অনিবার্য বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে
ভক্ত আর ভগবানের অবাধ লীলা ক্ষেত্রের জন্যে-
আমাদের দ্রুত একটা সেতু প্রস্তুত করা প্রয়োজন।








1 টি মন্তব্য: