মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২২

বীর সন্ন্যাসী বিবেকানন্দের ১৬০তম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্যঃ স্মরণে - অরবিন্দ সরকার।। Ankurisha।। E.Magazine।। Bengali poem in literature।।

 


বীর সন্ন্যাসী বিবেকানন্দের ১৬০তম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্যঃ স্মরণে - অরবিন্দ সরকার 





  বীর সন্ন্যাসী

 অরবিন্দ সরকার


" বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর;

জীবে প্রেম করে যেই জন,সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।"

মানবপ্রেমের মূর্ত প্রতীক এই বীর সন্ন্যাসী বীরেশ্বর। তাঁর মহত্ত্বে ভরা ব্যক্তিত্ব সকল ভারতবাসীর কাছে চিরস্মরণীয়।

জন্ম কলকাতার সিমলা অঞ্চলে। নরেন্দ্রনাথ পিতৃদত্ত নাম।সন্ন্যাস গ্রহণের পরে তিনি বিবেকানন্দ নামে খ্যাত।

ঈশ্বর কে? ঈশ্বর কোথায়? তার অস্তিত্ব আদৌ আছে কিনা -- ইত্যাদি নানাবিধ চিন্তায় ভারাক্রান্ত মন নিয়ে তিনি কেশবচন্দ্র সেনের দ্বারস্থ হন।ব্রাহ্মধর্মের উপর অনুরাগ জন্মালেও এখানে মনকে ব্যাকুল করে তোলার উত্তর পেলেন না। অবশেষে তিনি রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের সান্নিধ্য লাভ করেন।দূর হল তাঁর যাবতীয় সংশয়।পেলেন ঈশ্বরের অস্তিত্ব ও উপলব্ধি করলেন জীবনের স্বরূপ। খুঁজে পেলেন জীবনের আশ্রয়।এখান থেকে ঠাকুরের কাছে দীক্ষা নিয়ে নরেন্দ্রনাথ হলেন স্বামী বিবেকানন্দ।

রামকৃষ্ণ দেবের মৃত্যুর পর তিনি তীর্থভ্রমনে বেড়িয়ে পড়লেন।ঠাকুরের পবিত্র বাণী নিখিল বিশ্বে প্রচারকল্পে তিনি হলেন পরিব্রাজক।ঘুরলেন সমগ্র ভারতবর্ষ। জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের সান্নিধ্যে এসে তিনি ভারতের প্রকৃত স্বরূপ নিরীক্ষণ করলেন।আর্ত পীড়িত মানুষের জন্য ব্যথায় মন ভরে উঠল। তিনি সংকল্প করলেন মনে মনে -: দারিদ্র্যমোচনই হবে তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত। মানুষের মধ্যেই আছে ভগবান।তাই মানুষের সেবাই ঈশ্বরের সেবা।

দেশ ছাড়িয়ে তিনি আমেরিকার শিকাগো শহরে ধর্ম সম্মেলনে যোগ দিয়ে পাঁচ মিনিটের বক্তৃতায় বললেন- আমেরিকাবাসী ভগিনী ও ভ্রাতৃমণ্ডলী! তুমুল করতালিতে  ফেটে পড়ল সম্মেলন। তিনি শোনালেন বেদান্তের মাহাত্ম্য কথা। তাঁর প্রগাঢ় ব্যক্তিত্বে মার্গারেট নোবেল শিষ্যত্ব গ্রহন করলেন।প্রখ্যাতা হলেন ভগিনী নিবেদিতা নামে।এর পর তিনি রামকৃষ্ণ মিশন ও বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠা করেন।

তাঁর বক্তৃতায় জাদু ছড়িয়ে দিতে পারতেন তেমনি লেখাতেও জাদু।গদ্যরচনায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত।এক শ্রেণীহীন, বৈষম্যহীন,বর্ণহীন সমাজ গঠনের স্বপ্ন ছিল মূলমন্ত্র। সাম্প্রতিক, ধর্মান্ধতা ত্যাগ করে , জাতপাতের দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন মেথর মুচি চণ্ডাল,শুদ্র ব্রাহ্মন সবাই ভাই।এর দায় দায়িত্ব নিতে যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করেন।১৯০২ খ্রিস্টাব্দে ৪ জুলাই ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে চিরনিদ্রায় সমাহিত হন বীর সন্ন্যাসী বীরেশ্বর বিবেকানন্দ।

স্বামীজীর জীবনাদর্শ,বাণী ও প্রদর্শিত পথ আজও আমাদের জীবনের সমস্ত প্রেরণার উৎস।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন