রবিবাসরীয় বিভাগ-৩১
আজকের গল্প
গণতন্ত্র
উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়
মুখে ভাতের দিন বাচ্চাটা কলম, বই,সন্দেশ~কিসসু ধরেনি।মা মাসি ফুচকা খাচ্ছিল,তার দিকে হাত বাড়িয়ে ফুচকার স্বাদ নিয়েছিল।সেই থেকে ওর নাম ডাক ফুচকা বলেই।
ফুচকা এই পাড়ার ভারসাম্য।সব ঘরে,সব মনে,সর্বঘটে তার অধিষ্ঠান।অবাধ তার গতিবিধি।বিশেষত অন্দরমহলের কোনও আব্রু তার জন্যে প্রযোজ্য নয়।আমার গিন্নি ওকে ডেকে বলল, দেখো না,ফুচকা,তোমার দাদা কেমন যেন পাগলামি শুরু করেছে।প্রচুর পড়াশোনা করছে।কিন্তু কেন?ফুচকা কান খাড়া করে।আর বল কেন!গণতন্ত্র না কী সব ছাইভস্ম,ওই নিয়ে মাথাব্যথা।ফুচকা সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে দিল।আমার হাত ধরে বলল,চল দাদা।বই রাখো।আমি থাকতে বই?নিয়ে গেল নতুন বস্তিতে।অনেক গলি ঘুঁজি পেরিয়ে একটা আলকাতরা মাখানো টিনের দরজায় ধাক্কা দিল।এক বয়স্ক মহিলা দরজা খুলে ফুচকাকে আদর করে ঘরে নিয়ে গেল।একটা দমচাপা বড়ো ঘরের মেঝেতে শুয়ে কাতরাচ্ছে চারজন। এ বাড়ির চার ছেলে।একটু দূরে দুই বউ রান্না চাপিয়েছে।ওই চারজন চারভাই। চার রকমের দল করে।গত এক সপ্তাহে নিজেদের ভেতর মারপিট করে এই হাল।দুজন বিয়ে করেছে।বাকিরা করেনি।
দাদা,বুঝলে গণতন্ত্র?ফুচকার প্রশ্ন।আর আমার বলার কিছু ছিল না।চোখের সামনে চার দেয়ালের গণ্ডি ভাঙতে ভাঙতে হয়ে গেল বিশাল এক দেশ।নামটা লেখা হয়ে গেল। পত পত্ করে উড়তে লাগল তিনরঙা জাতীয় পতাকা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন