বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১

ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাস (পর্ব-১৩)।। ট্রেকিংয়ের পথে রহস্য — অনন্যা দাশ।। Ankurisha।। E.Magazine।। Bengali poem in literature।।

 




ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাস (পর্ব-১৩)

ট্রেকিংয়ের পথে রহস্য 

অনন্যা দাশ 



এরিকের সঙ্গে আরো দু’জন লোক ঢুকে এসেছে। তাদের হাতে ভয়ঙ্কর দেখতে দুটো মেশিন গান।  

রক উঠে দাঁড়িয়েছিল, ওদের দেখে ধপাস করে বসে পড়ে বলল, “ক্যাথি আমাদের ফাঁসিয়ে দিয়ে গেছে!”    

এরিক মুখে চুক চুক করে একটা শব্দ করে বলল, “আহা ও বেচারাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। ওর কোন উপায় ছিল না। আমরা যা বলছি তা না করলে ওর বাচ্চাটাকে তুলে নিয়ে গিয়ে অ্যাসিডের চৌবাচ্চায় ফেলে দেবো বলেছিলাম তাই ওকে যা বলেছি ও করেছে! এই দেখো এই বাড়ির ডুপ্লিকেট চাবি। একে ভাইটা মারা গেছে, তার ওপর এত চাপ। যাক তোমরা দুজন দাঁড়িয়ে কে করছ? এদের বেঁধে ফেল!” শেষ কথাগুলো সঙ্গের দুজনকে বলা। তাদের একজন মেশিন গানটা এরিকের হাতে ধরিয়ে ওদের তিনজনের হাত, পা, মুখ আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলল। ভয়ঙ্কর বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে ওরা কেউ টুঁ শব্দটিও করতে পারল না। করলেও কিছু হত না। সমুদ্র সৈকতে কেউ নেই যে ওদের চিৎকার শুনতে পাবে।

“এবার তোমাদের খেল খতম!” বলে পকেট থেকে একটা সিগারেট বার করে লাইটার দিয়ে সেটাকে জ্বালিয়ে কাছের একটা চেয়ারের কাপড়ের গদিটার ওপর রেখে দিল।   

“বিদায়!” বলে এরিক তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে বেরিয়ে গেল। ওরা তিনজন অসহায় চোখে দেখতে লাগল সিগারেটের আগুন আস্তে আস্তে গদিটাকে জ্বালিয়ে দিচ্ছে

হঠাৎ দড়াম্‌ করে দরজা ভেঙ্গে হুড়মুড় করে কয়েকজন বাড়িটায় ঢুকে এল। তাদের কাউকে চিনতে পারল না ওরা শুধু অফিসার ওম্যালিকে ছাড়া।  

আগুন দেখে দুজন লোক তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গিয়ে ফায়ার এক্সটিংগুইশার নিয়ে এল। সেগুলোর ফেনা দিয়ে আগুন নেভানো হল। ওদের বাঁধন খুলে অফিসার ওম্যালি বললেন, “তোমাদের ওপর চিৎকার করার জন্যে দুঃখিত কিন্তু আমাদের কিছু করার ছিল না। তোমরা আমাদের অনেকদিনের পরিশ্রম নষ্ট করে দিতে পারতে। আসলে আমাদের ডিপার্টমেন্ট এতটাই ছোট আর লোকবল এতটাই কম যে আমরা ওদের সঙ্গেই আছি এমন ভান করে চলেছিলাম। ওরা যে এতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে আমরা ভাবতেও পারিনি! আমরা এফ বি আই কে সব বলেছিলাম কিন্তু আমাদের কাছে কোন প্রমাণ ছিল না। এফ বি আই তখন ওদের একজনকে পাঠালো আড়ি পাতার জন্যে। এরিকের সেক্রেটারি ম্যান্ডি আসলে এফ বি আইয়ের লোক। সে ওদের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করছিল। ইতিমধ্যে ওরা সব পাশা উলটে দিয়ে গ্রান্টকে খুন করে ফেলল আর তোমরা এসে গেলে! আমরা ভয়ে সিঁটিয়ে ছিলাম যে ওরা তোমাদেরও ভয়ানক কোন ক্ষতি করে বসবে!”

অফিসার আরো বললেন, “গ্রান্টের বাবা, মা, দিদি সবাইকে ওরা ভয়ঙ্কর ভয় দেখিয়ে রেখেছিল। ওরা তাই চাইছিল তোমরা চলে যাও এখান থেকে কিন্তু তোমরা তো থেকে গেলে! যাই হোক তোমরা জেনে খুশি হবে যে এই মাত্র এরিক আর তার দুই চেলা গেরেফতার হয়েছে। আর ওদিকে ফিনিক্সে সি অ্যান্ড স্যান্ডের মাথাকেও এফ বি আই ধরে রেখেছে। ওরা শেষ! গ্রান্টকে আমি ছোটো থেকে বড়ো হতে দেখেছি। আমার ছেলের সঙ্গে এক স্কুলে পড়ত সে। তাকে খুন করে পার পেয়ে যাবে ওরা সেটা হতে পারে না!”

বাইরে বেরিয়ে ওরা দেখল কালো জিপটা দাঁড়িয়ে রয়েছে। এফ বি আইয়ের লোকজন বলল, “পাছে ওরা তোমাদের কোন ক্ষতি না করে বসে তাই আমরা তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে ছিলাম।”

রক বলল, “তাহলে ভজার গাড়ির টায়ার আপনারা ফালা ফালা করেছেন?’

এবার এফ বি আইয়ের লোকজন মুখ চাওয়া চাওয়ি করে বলল, “না তো!”

“তাহলে ওটা আবার কে করল?”

ভজা বলল, “ওটা মনে হয় আমি বুঝতে পেরেছি। অফিসার আপনাকে আমাদের ট্রাস্টি অ্যালের গ্যারেজে ছেড়ে দিতে হবে। আমাদের গাড়িটা ওখানেই আছে। আর মোটেলে গিয়ে দেখবেন যদি সেখানে একজন খুব মোটা আর একজন শুঁটকো লোককে একসঙ্গে দেখতে পান তাহলে তাদের গেরেফতার করবেন কারণ আমি জানি ওরাই আমার গাড়িটার ওই হাল করেছে! একটা ধূসর রঙের হ্যুন্ডাই ইলান্ট্রা চালায় ওরা।”


চলবে...







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন