আগমনী বন্দনা -২৭
কেতকীপ্রসাদ রায়
উমা ফিরছে আটচালায়
এতদিনে বুঝলাম ভারতবর্ষের অন্য নাম কেন মাতৃভূমি।
ঘরের মেয়ে ফিরলে ঘরে, সোনার চেয়েও অনেক দামী॥
বোধনের আসন থেকে বিল্বপত্রের কাছে আত্মনিবেদন,
ঐ দেখা যায় কৈলাস থেকে সারিবদ্ধ আলোর বিচ্ছুরণ ;
মায়ের সাজ সাজ রবের মধ্যে গজে আগমন,
আসমুদ্রহিমাচল শস্য-শ্যামলে পূর্ণ যৌবন।
নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় শান্তির বাণী,
মলয় বাতাস জানিয়ে দিচ্ছে দুর্গাই দুর্গতিনাশিনী।
প্রথম আলোয় ধানের শিষে মুক্ত শিশির বিন্দু,
মাটি ছুঁয়ে চুয়ে পড়ে মাধুরী রাতের অর্ধেন্দু।
ভোরের ঝরা শেফালী সুরভী এখনও অতীত হয়নি,
নগরে গ্রামে কাননে উচ্ছলি উন্মাদনা হে ভুবন মোহিনী।
এবার সব ধুয়ে যাবে পাপ,পাপ কেন হবে- গ্লানি,
বোধনের আসনে সোঁপেছি প্রাণ,আসছে পাপ বিনাশিনী।
অনেকদিন পর উমা ফিরছে নিজের ঘরে,
বন্ধ চোখে দেখি মেয়ে আসছে সপরিবারে ;
ঐ শোনা যায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণের ভুবন মাতানো সুর,
ঐ শোনা যায় রুমঝুম শব্দ পায়ের নূপুর ;
আউশ ধানের চাল রেখেছি তুলে গোলায় ভরে,
এক দামে কেনা আছে নতুন শাড়ি তাঁতির ঘরে।
বোধনের থান থেকে নূপুরের শব্দ বাজে কানে,
আমার উমা আসছে আজ,আনন্দ বাজে প্রাণে;
ঘরের মেয়ে ফিরছে ঘরে রাজ রাজেশ্বরী বেশে,
যত সুখ বাঁধা আছে শস্য শ্যামলে ভরা এই আটচলার দেশে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন