আগমনী বন্দনা -২৩
অশোক রায়
১.
অনন্ত শক্তিরূপিণী
ঝড়ের রাত্রিশেষে অসংখ্য বৃষ্টিফোঁটায় ফুটেছে সকাল
কৈলাশের গ্লেসিয়ার-রথে মা আমার রওনা দিয়েছ কি
কাশের বন ডুবেছে প্লাবনে বজ্র-ভীষণ আকাশ
মাঠ ঘাট ক্ষেতের ফসল কুঁড়ে ডুবে গেছে সব আশা
পথ হারিয়ে মন হারিয়ে চন্ডীমন্ডপের কোণে
তর্পণ করি এলোমেলো ঘর-ভাসানো জলে
নিরন্ন শিশু কোলে পুঁটলি-কাঁধে মায়েরা কাঁদে ঢেউয়ের খেয়ায়
আমি যে দেখতে চাই মা-অভয়া লালপেড়ে শাড়িতে নৌকায়
বাঁধের ছাড়া জল যখন অসুর হয়ে দিগন্ত দাপায়
হিমালয়-দুহিতা দশভুজায় আবির্ভুতা সম্মুখ সমরে
গতি বদলায় কালো আকাশ ধুসর সমুদ্র ক্রমশ গভীর নীল
সকালের সোনা রোদে বেজে ওঠে জীবন প্রস্ফুটিত আগমনী
তুমিই তো আশা দশের ভরসা মা অনন্ত শক্তিরূপিণী…।
আন-লক আগমনী
সাত-সমুদ্দুর তেরো নদী পেরিয়ে
মস্ত বড় হলের ভিতর লম্বা চওড়া বাক্সে
শুয়ে আছে সে গভীর যোগনিদ্রায় লক্ড
সঙ্গে কাশের গুচ্ছ একচালা ধুপ-ধুনো চাঁদমালা
লক্ষ্মী সরস্বতী কার্তিক কলা-বৌ গণেশ
বাঁধা নিশ্ছিদ্র নিষ্প্রাণ উৎসবহীন ঘরে
এখানে নেই বন্যা ধ্বংস চরম প্রকৃতি লীলা
শুধু ডলার-ইউরো অন্তহীন হিসাবের খাতা অফিসের বদ্ধ ঘরে
সপ্তাহান্তে ছুটির প্রাতে পুরোতমশাই আসবেন সাথে
আন-লক্ হবে অনাবিল সুখের প্রাসাদ প্রমোদ প্রবাহ
খুশির বন্যায় ভেসে যেতে যেতে প্রভাতী রাগে
উঠবে বেজে প্রবাসী আগমনী শারদীয় সুধী আবেশে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন