রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১

শুধু কবিতায়... আলোর উৎসব -৩৬।। প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী।। Ankurisha ।। E.Magazine ।। Bengali poem in literature ।।



আলোর উৎসব -৩৬

প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী 


১.

সম্প্রীতি



সম্প্রীতির সে কাঁচবাড়ি রোদ্দুরে ঝলসায় 

দূর থেকে দেখে বলি আহা!

ভিতরের অধিবাসীর কতজন উদ্ধত

 পাথর ছুঁড়ে দ্যাখে তাহা।


সম্প্রীতির বেণুবনে দোয়েল কোকিল স্বর 

 পিঁপড়েরাও থাকে আহ্লাদে,

খায় দায় , গান গায় , অপরের খবর নেয় 

 উন্নয়ন ভাবেনি তারা বাদে।


সম্প্রীতির মন্দিরে জ্বলে দীপান্বিতা খুশি 

 মুছে দেয় মিশকালো আঁধার,

উড়ন্ত তুবড়ি যত শূন্যে করে লম্ফঝম্প

  শান্তিলতায় ছাঁটে চারিধার।


সম্প্রীতির উদ্যানে চলে মহারঙ্গ খেলা 

  ভোজবাজি কারসাজি পাশাপাশি,

সহস্র দুঃশাসন লড়ে নির্ভীক সত্যের সাথে

 কালস্রোতে অস্তিত্ব যাবে ভাসি।


সম্প্রীতির ললিত কথা নন্দিত ফুলকি হয় 

 ফেনায়িত তরঙ্গে হাসে জীবন সৌরভ,

বিনষ্ট সম্প্রীতির অনল গরল পানে 

  সে জাতি ধারণ করে তুচ্ছ অগৌরব।


ধিকৃত ,বিকৃত , ধর্ষিত সে সম্প্রীতি 

 নন্দিত বনমাঝে বিছাইছে কাঁটা,

নিন্দিত সে সম্প্রীতি উলঙ্গ ভুবনময়

  ক্ষয়িষ্ণু সমাজ হাতে অস্ত্ররূপে ঝাঁটা।


সম্প্রীতির পদমূলে কে কেন কোরাণ রাখে

   পবিত্র গ্রন্থকে করে যূপকাষ্ঠে বধ ,

সাবালক নয় সে জাতি ধর্মান্ধ প্রেম সেথা 

  অন্ধ অরণ্যে ছড়ায় কুটিল হিংসামদ।


হিংসা নয় , আগুন নয় , ধ্বংস করো রোধ 

 দৃঢ়তার অঙ্গীকার আনো লুপ্ত সম্প্রীতি,

রুক্ষ মরুর মাঝে রচো ফুল্ল মরুদ্যান 

  সেথা সৃষ্ট হোক শুধুই বসন্ত গীতি।




২.

 নীল বাজি


ওই ফাটে নীল বাজি 

কার বাজি কারসাজি

সব কিছু ভোজবাজি         জানি তাই 

কেন নীল কোথা নীল    

শব্দতে কোথা মিল 

ফাটলেই  দিই খিল            ওরে ভাই ।


সরকারী ডেসিবেল   

করে যায় ডাহা ফেল 

তৈরিতে মহাখেল               দ্যাখে সব ,

আদালত  বলে কতো

কানে নাহি ঢোকে ততো

ফাটানোয় পারে যতো        উৎসব ।


দীপালিকা জ্বালে আলো

ঘুচে যায় যত কালো

নীল দিয়ে কতো ভালো        কে জানে !

কালিমাকে যে ঘুচালো

ঝিকিমিকি জমকালো

চকোলেট  কে ফাটালো        না মানে ।


রাত জুড়ে নীল বাজি 

ওরা সব মহাপাজি 

চাইলেই ডিগবাজি             ওরা খায় !

হেমন্তের রাতখানা

নীল বাজি ফাটে টানা 

আইন তো রাতকানা         সে  দ্যাখায় ।

 



৩.

 রংবাজি নয় 


ধোঁয়া আর বিষ ভরা দীপালির বাজি 

রাত জুড়ে যত ফাটে পাড়া নির্ঘুম ,

আলোকিত ফুলকির কতো কারসাজি

রঙেরূপে উচ্ছ্বাস সে যে মহাধুম।


শিশু হাতে ফুলঝুরি চরকির হানা 

সাপবাজি ব্যাঙবাজি ফাটে দোদমা ,

লংকায় দড়িবাজি নাই কোনো মানা 

আহা কতো উল্লাস কতো সুষমা।


চটপটি, গুলিবোমা , রঙমশালে

কালো ধো়ঁয়া পান করে ধন্য মানুষ,

ডেসিবেল বেঁধে দিয়ে পথ  দেখালে

আদালত শুধু জানে ফেরে নিকো হুঁশ।


আদালত আদেশে বন্ধ বাজি 

মোমবাতি প্রদীপে হোক দীপালিকা,

শিশুর আজ হুংকার রাখো রংবাজি

দূরে রাখো শব্দের মহা বিভীষিকা।


জ্বালো আলো দিকে দিকে রাত্রি জুড়ে

যতো কালো নিভে যাক মোমের আলোয়,

সৃষ্টির নবরাগ গীত হোক সুরে 

শক্তির মহাপূজা কাটুক ভালোয়।









1 টি মন্তব্য:

  1. সব কবিতাগুলি খুব সুন্দর হয়েছে । ভালো থাকুন। দীপাবলির শুভেচ্ছা । আমরা এখন গোয়াতে রয়েছি । এক সপ্তাহ পর ফিরব ।

    উত্তরমুছুন