আজ বিশ্বপথিক স্বামী বিবেকানন্দের ১১৯ -তম মহাপ্রয়াণ দিবস।আমার নতজানু শ্রদ্ধা ও প্রণাম সারা বিশ্বের যুবশক্তির আদর্শ এই মানুষটির প্রতি, যাঁকে কোনোদিন ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।
স্বামী বিবেকানন্দের প্রয়াণ দিবস
অঙ্কুরীশা-য় কবিতায় শ্রদ্ধাঞ্জলি
নিবেদনে—
১. তপনজ্যোতি মাজি
২.দুর্গাদাস মিদ্যা
৩.সমাজ বসু
৪.শ্যামল মন্ডল
৫.বিমল মণ্ডল
৬.মনোজ ভৌমিক
৭. রঞ্জন ভট্টাচার্য
বিশ্বাস
তপনজ্যোতি মাজি
বিশ্বাস অর্জনের জন্যে বিশ্বাস চাই অবিচল।
প্রতিদিন ছোট হচ্ছে আমাদের উচ্চতা।
নিজেদের খর্বতা দেখে লজ্জা হয় কখনও কখনও।
আমরা হতে পারিনি কত কিছু।
মানবিক হতে পারিনি।
ধর্ম নিরপেক্ষ হতে পারিনি।
অসাম্প্রদায়িক হতে পারিনি।
পারিনি নারিজাতির প্রতি শ্রদ্ধাবনত।
আমরা আয়ত্ত করেছি কুপমুণ্ডুকতা।
ধর্মভেদ এবং ধর্মান্ধতা।
সত্য আর অহিংসা থেকে সরে গিয়ে
শিখছি ভেদ দর্শন।
আমরা ভাঙছি নিজেদের।
টুকরো টুকরো করছি ঐক্য।
জ্ঞানকে দূরে সরিয়ে অজ্ঞানতায়
ঢেকে ফেলছি নিজেদের।
সৎ ও সাহসী হতে বলেছিলে।
আমরা পারিনি।
পরিব্যাপ্ত ব্যর্থতার মধ্যে তোমার
আর একটা জন্মদিন।
তন্ময় মননে ভেবে দেখার দিন।
আমরা তোমার স্বপ্নের যোগ্য
উত্তর প্রজন্ম কিনা?
চিরস্মরণীয় বীর
দুর্গাদাস মিদ্যা
আমার মনের মাটিতে যে নাম
সদা জাগরূক সে নাম স্বামী বিবেকানন্দ।
হাজার দুখের মাঝেও তিনি
আমাদের সকলের চির আনন্দ।
পৃথিবীর এই গভীর অসুখে তাঁর আশীর্বাদ
ঘোচাবে আমাদের সকলের
মানসিক অবসাদ।
তাঁর চোখের দিকে যখন আমি চাই
হাজার প্রতিবন্ধকতায় চলার শক্তি ফিরে পাই।
তিনিই আদিত্য তিনিই অগ্নিবর্ণ পুরুষ
বেহুশ প্রাণে তিনিই জাগান হুশ। তিরোধান দিবসে জানাই শতকোটি প্রণাম
চিরস্মরণীয় বীর তিনি মহৎ এক প্রাণ।
বিবেকানন্দ
শ্যামল মন্ডল
আঠারো'শ তেষট্টিতে
বার-ই জানুয়ারি
ব্রহ্মজ্ঞান বিবেকানন্দ
জন্ম হল তাঁর'ই।
কর্ম যোগী ধর্ম যোগী
সাম্য এনে বঙ্গে ,
সকল ধর্মের শ্রেষ্ঠ ধর্ম
মেখে ছিলেন অঙ্গে।
বাল্যকালেই জাত বিভেদের
গণ্ডী ভেঙ্গে দিয়ে,
মানবধর্ম করতে পালন
দৃঢ় শপথ নিয়ে।
পরমহংসের পরম ছায়ায়
পেলেন নতুন শিক্ষা,
যত মতে তত পথে
মানব ধর্মের দীক্ষা।
দেশ হ'তে দেশ-দেশান্তরে
ধর্ম প্রচার তরে।
ঘর-পরিজন সকল ছেড়ে
সন্যাসী রূপ ধরে,
শিকাগোর সেই বিশ্ব-সভায়
ধর্ম যোগীর বেশে,
বিশ্ব-জোড়া নাম হ'লো তাঁর
দীর্ঘ্য ভাষন শেষে।
বিশ্ব-ভূবন জয়ের পরে
এলেন দেশে ফিরে,
বেলুড়মঠ গরীমা তাঁর
তাঁর মহীমা ঘিরে।
রামকৃষ্ণ মঠ-মিশন গড়েন
মানব সেবার জন্য,
রাজ কর্মে'তে ভক্তি জ্ঞানে
মানব জাতি ধন্য।
চৌঠা জুলাই ঊনিশ'শ
এলো অমোঘ সেদিন,
বেলুড়মঠে ধ্যানের মাঝেই
হলেন সত্যে বিলীন।
প্রেম
হে পরিব্রাজক
মনোজ ভৌমিক
দিব্যকান্তি সুপুরুষ সুন্দর শ্রীমুখ,
অধরের দীপ্তি ভাসে সূর্য সম তেজে।
অরূপ লোচন হেরি মনে জাগে সুখ,
জ্ঞানগর্ভ বাণী যার এ বিশ্বে বিরাজে।
তিনিই বিবেকানন্দ বঙ্গের সন্তান,
আন্তরিক সম্ভাষণ বড়ই মধুর।
চিকাগোয় দেখালেন ভারত মহান,
নিমেষেই করলেন নিকট সুদূর।
কর্মই শ্রেষ্ঠ সম্পদ মন্ত্র ছিল যার,
গড়তে সমৃদ্ধ দেশ আহুত যুবক।
জীব সেবা শিব সেবা ভাবনাই তার,
ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা তুমি হে পরিব্রজক।
একবার জন্ম নাও হে মহামানব,
ধর্ম জীবন ধারণ হোক অনুভব।
এসো এসো হে বিবেক
রঞ্জন ভট্টাচার্য
আজ আর নেই সেই বটবৃক্ষ
ঝরেছে তার পাতা ফুল ফল
আগাছা গ্রাস করেছে তাকে
জঞ্জালে ভরেছে শরীর ফুসফুস হূৎপিণ্ড
ফুসফুসের রক্ত চুষে খায় দুর্বৃত্তায়ন...
বিবেক হারিয়ে গেছি খরস্রোতা নদীর ভাঙনে নিমজ্জিত আজ সাগর অতলে।
বিবেকের বিবেক আজ হৃদয়ের কোণে কোণে বিন্দুমাত্র নেই
যা ছিল সব কোথায় !
সেই যুবক তার যৌবন শক্তি কোথায়
সেই উদ্দীপনা উন্মাদনা আর শ্রদ্ধা ভক্তি!
এসো, এসো বিবেক নতুন করে সাজাও তোমার সমাজ
অবতার রূপী আর এক শক্তিকে
পাঠাও আমাদের মাঝে
তোমার চিন্তা-ভাবনা বিবেক যেন আগুনে পুড়ে ছারখার
শুধু অপেক্ষায় আছি এসো আবার এসো আবার এসো হে বিবেক...
শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করি স্বামী বিবেকানন্দ কে
উত্তরমুছুনসেই সঙ্গে ভালবাসা রোইল অঙ্কুরীশার প্রতি