তিনটি কবিতা
চিন্ময় দাশ
১.
ভাগ
একটা সরল রেখার মতো
আমাদের ভাগ করলাম,
না , কোনও চিহ্ন দিলাম না ।
শতকিয়া,শুভঙ্করীর আশ্রয়
নিতে চাইল না মন !
আর্যভট্ট, বরাহমিহির এই ভাগ
মেলাতে পারতেন না কখনো !
দু'দিকে পড়ে রইলো রক্ত-মাংস ,
অস্থি-মজ্জা, গার্হস্থ্যের কূটকচালি,
ধূসর ক্যালেন্ডার!
আমরা আকাশ প্রদীপের
সিঁড়ি বেয়ে ড্যাং ড্যাং করে
পৌঁছে গেলাম এক আনন্দলোকে!
এখানে এসে ভাগের অঙ্ক
কিছুতেই মেলাতে পারলাম না !
২.
পথের পাঁচালি
নিশ্চিন্দিপুরের অপু কাল যখন
আম আঁটির ভেঁপু নিয়ে
বিবাদী বাগে বাজাচ্ছিল একমনে
তখন দুর্গা কাশবন ঠেলে
রেলগাড়ি দেখতে শিয়ালদা
স্টেশনে পৌঁছে অবাক হয়ে গেল !
সর্বজয়ার ভাঁড়ারে টান পড়তেই
মলে গাড়ি নিয়ে ছুটলো --
ইন্দির ঠাকুরন তার ভিক্ষার
ঝুলি ফেলে ফ্যানটা বাড়িয়ে
দিলো ফুল স্পীডে--
আর স্বগতোক্তি করলো
আজ গরমটা বড্ড বেশি !
দমকা হাওয়ার মতো স্বপ্নটা
ভেঙে গেল হরিহরের
খান খান হয়ে !
বৃষ্টিতে ভিজছে আড়শেওড়া,
বনকলমি--
পুকুরের জলে বুড়বুড়ি কাটছে মাকড়শা আর
ঘাই মেরেছে কালবোস!
হরিহরের চোখে তখন ভাসতে থাকে পথের পাঁচালির একটুকরো চিত্রকল্প!
৩.
কবিজন্ম
কবিকেও একদিন সমাধিতে যেতে হয় শব্দের সুড়ঙ্গ বেয়ে --
সেখানে কবি আকাশ দেখে ,
জলছবি!
বিষাদে, দ্রোহে কবির মনে হয়
এ জীবনে তো হলো না কিছুই,
জন্মান্তরে যদি কবি হওয়া যায় --
খড় আর কাগজ মিলিয়ে
কবিতার জন্ম ইতিহাস
লিখে ফেলবে সে!
কেন না , কবিও তো
রক্ত-মাংসের মানুষ,
তাই সাদা কাগজও
কখনো কখনো কবিতা হয়ে উঠতে পারে!
-----------------------------------------------------------------
আপনার মৌলিক ও অপ্রকাশিত সেরা লেখাটি পাঠিয়ে দিন আজই
ankurishapatrika@gmail. com
-----------------------------------------------------------------

খুব ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুন