বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২০

ছড়া গুচ্ছ ।। সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তী।।

 




ছড়া গুচ্ছ 
 
সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তী


হারানো দিনের কথা


শীতের সকাল
সোনালী রোদ
জানালায় দেয় উঁকি,
রাত পোহালেই
ঘরের কোনে
চুড়ুইর ডাকাডাকি। 

ডাকতো দাদু
কিরে ভাইয়া
আর কতক্ষন ঘুম ?
কাজের ফাঁকে
মা দিয়ে যায়
ঘুম ভাঙানোর চুম।

ঠাকুর মায়ের
ঝুলির ভিতর
মুড়কি মোয়া নাড়ু,
পাশে এসে
থাকতো বসে 
ছোট্ট বোন পারু। 

লেপের নিচে
লুকিয়ে খাওয়া
শীতের দিনের পীঠে,
কি যে মজা
কি যে মজা
মধুর মতো মিঠে।

খেজুর রসের
বিন্নি পায়েস
দাওয়ায় বসে খাওয়া,
শীত এলেই
মামার বাড়ির
মরা নদীতে নাওয়া।

দিন গুলি যে
হারিয়ে গেছে
পাইনা খুঁজে তারে ,
ফিরে তাকাই
পেছন পানে
যখন মনে পরে। 

সব যে গেছে

সব যে গেছে
নিয়ে  সবার
দিন বদলের ঢেউ,
রসাতলে
তলিয়ে গেছে
জানো কি তা কেউ?

আঁচল ভরা
সোহাগ গেছে 
শাসন গেছে সাথে,
লাল কাগজের
বইয়ের লেখা 
হারিয়ে গেছে রাতে। 

অংক গেছে 
ধারাপাতের 
বাংলা গেছে মুখের,
বইয়ের সাথে
সখ্য গেছে 
সময় গেছে সুখের।

সন্ধ্যা বেলার 
পাখি গেছে 
ভেঙে পাখির মেলা,
উঠুন থেকে 
গল্প গেছে 
নানান রকম খেলা।

বাঁশের কলম
ছাইয়ের কালি
কলাপাতায় লেখা,
চিরতরে
হারিয়ে গেছে 
যায়না এসব দেখা।

এখন সবই
বদলে গেছে
সবই চলেছে নেটে,
অতীত গেছে 
সমাজ নামের
অজগরের পেটে। 




চোখে যে বিশাল নদী

চোখে যে বিশাল নদী
আছে সেথা ঢেউ,
অতল গভীরে খেলে
স্বাদহীন  নোনাজলে
জানে কি তা কেউ ?

সেথা নিত্য প্রেয়সী এসে
নাচে গায় কেঁদে হেসে
জীবনের কতকথা কুলকুল তানে,
কোথা হতে আসে জানি
কোথা তার ঘর খানি
ভেসে যায় অবেলায় অজানার টানে।

বৈশেখে নতুন জলে
জল কেলি খেলা খেলে
নিভৃতে নীরবে খুঁজে কাহারে জানি?
চাঁদের আলোতে চাঁদ
কলংকের পরমাদ
ছিটে দেয় সংগোপনে
দুইহাতে টেনে দেয় কালো পর্দাখানি।

চোখের আড়ালে থেকে
কে যেনো আমায় ডাকে
চেয়ে দেখি কিছু নেই
কিশোরী প্রেমের মতো বড়ই অভিমানী,
লোকুচুরি খেলা খেলে
চোখের গহীন জলে
জানিনা কেনো জানি।

আমি যদি সন্তর্পনে
কাছে নিতে চাই টেনে
লজ্জা ও অভিমানে বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে,
বিরহ বেদনা ভার
কতো বলো সহি আর
ব্যাকুল আর্তি কেঁদে উঠে 
নিরাশার মর্মরে। 




৩টি মন্তব্য: