অমরত্ব
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
এখনও বসন্তের মেঘলাবিকেলে আপনি আসেন
বাসন্তী পোশাকের ফিনফিনে অস্তিত্ব বেশ বুঝি
প্রিয় নদীর চিকচিক স্রোতের মতো আপনার কপালে
আজও ব্রীড়া আর ঝুরোচুলের লুকোচুরি।
এইটুকুর জন্য ক্যানভাস জুড়ে কত রম্যকাহিনি.....
বিরল স্নায়ুরোগে পঙ্গু এক কিশোর কখন কীভাবে
স্টিফেন হকিং হয়ে ওঠে আপনি জানেন না
জানার কথাও নয় তবু
জলের ভেতর অন্ধকার তারপর গভীর থেকে গভীরতম
দূর মহাকাশে একটা নয় বেশ কয়েকটা মহাজাগতিক
শূন্যগহ্বর নিয়ে তার খেলা আর গণিতপাত
গণিতের সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে স্বপ্নময় ধ্রুবত্বে অবিচল
অমরত্ব সবার জোটেনা স্টিফেন হকিং অমর।
কিশোরটি এখনো স্মৃতি গোনে মহাকাশ ঘাঁটে আর
কয়েকটি অসমীকরণের উত্তর খোঁজে
সে কিন্তু অমর হয়নি।
পুজোর রানি
শেখ একেএম জাকারিয়া
ঢাক কুড়াকুড় উলুধ্বনি
চলছে ডানে-বায়,
পুজো এলে জোয়ান বুড়ো
মনখুলে গায় গান।
প্রসাদ নাড়ু মিঠাই পায়েস
কত্ত লোকে খায়,
শারদ আলো সবার ঘরে
মন জুড়িয়ে যায়।
দুর্গা লক্ষ্মী সরস্বতী
গণেশ আর অসুর,
দেখার পরও মিঠে না সখ
রাত পেরিয়ে ভোর।
পুজোর রানি দুর্গা দেবী
লড়াকু এক বীর,
অশুভকে হটান তিনি
ছুঁড়ে শান্তির তীর।
এখানে ওখানে
দীপক বড়ুয়া
এখানে আকাশ নীল, নীল নীলে ঝিলমিল
এখানে সূর্য আছে,আছে রোদ কড়া
এখানে শিশির আছে, উড়েউড়ে নাচে
জ্বলজ্বলে তারা হাঁটে, যায় নাতো ধরা!
ওখানে ফুল পাখি, মেঘনা, সুরমা নদী
সবুজের কণা হাসে স্বপ্নীল চারিপাশে
মা মাটির ধুলো ভাসে সবুজ মাঠে
অন্তর ছুঁয়ে আছে, জুঁই বেলি শরতের কাশে!
এখানে, রূপে ঝরা, চকচকে চাঁদ
মিষ্টি স্নিগ্ধ আলো ধবধবে
এখানে সূর্য ডোবে, আঁধার গর্বে দোলে
স্বপ্নীল বৈভবে থির অনুভবে!
ওখানে বৃষ্টি নামে টুপটুপটুপ
ঝুপঝুপ ঝড়ে ভাসে রঙধনু গাঁও
সমুদ্দুর ঢেউ রাগে, রাগে অনুরাগে
দূর দেশে ভেসে দেয়,প্রিয় ডিঙি না'ও!
এখানে ওখানে, নয় কোন ভাগ
আকাশ, পৃথিবী, প্রকৃতি, কারুকাজ
শৈল্পিক ছন্দে রবে চিরখন
বদল হবেনা কভু, মিহি রঙে,- সাজ!
লুকোচুরি
প্রদীপ কুমার রায়
পায়ে পায়ে অনেকটা পথ পেরিয়ে
চলে এসেছি তোমার সীমানা ছাড়িয়ে।
কাঁটাতারে আজও ঢাকা সীমান্ত মুখ
এক পাড়ে প্রতীক্ষায় অশান্ত অসুখ।
চোরাবালিতে পা রেখে চলমান
কোরাসে গান,"শুধু তোমাকে চাই"
নীরব অভিমানে সরে এসেছি তাই।
যত সুন্দর সাজানো থাক চলচিত্রখানি,
জীবনের ধারাপাত সম্পূর্ণ হবে না জানি
সত্যিই কি পূর্ণ হয় পায়ে চলা পথ
যোগ্য সম্পূর্ণ করে ফিরে আসে জয়রথ।
আশা ভরসার যুগ্ম হাঁড়িকাঠে
রাত কেটে দিন হয়, খেলা জমে ওঠে।
জীবন যন্ত্রনার চাপা কণ্ঠস্বরে
একটু একটু করে হতাশা চুঁইয়ে পরে।
এ অতি সরল সত্য খোলা আকাশ তলে
মনের শামিয়ানায় , আঁধারে
জোনাক জ্বলে।
মায়া মোহে মনে মনে চলে লুকোচুরি
তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে উড়ে চলে ঘুড়ি।
অভিমানে পথ চলা শুরু সেই থেকে
পায়ে পায়ে এই পথ গেছে এঁকে বেঁকে।
কাঁটা তার পেরিয়ে চলে এসেছি দূরে
তুমি ভালো থেকো, আপনার নীরে।
খোকার বায়না
বিপ্লব গোস্বামী
দুদিন হতে খোকন সোনার
মুখ হয়েছে ভারী,
মায়ের কাছে বায়না তার
যাবে মামার বাড়ি।
মামার বাড়ি যাবে সে
চড়ে রেল গাড়ী,
সঙ্গে নিবে বাবুর হাটের
রসগোল্লার হাঁড়ি।
মামা বাড়ির দক্ষিণ পাশে
বিশাল খেলার মাঠ,
খেলবে তাতে নানান খেলা
নাইবে নদীর ঘাট।
পশ্চিম দিকের পুকুর পাড়ে
আম বাগানে মাঝে,
শুনতে পাবে পাখির কূজন
সকাল দুপুর সাঁঝে।
মামা বাড়ি ভারী মজা
পড়ার চাপ নাই,
খেলা ধুলা শুধুই মজা
বয়না ধরেছে তাই।
নৈঃশব্দের কবিতা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন