বুধবার, ২২ জুলাই, ২০২০

নির্বাচিত ছড়াগুচ্ছ।। চন্দনকৃষ্ণ পাল





  স্বপ্ন সকাল

নাচছে ময়ূর পেখম তুলে
দেখে খোকন হাসে
কদম ফুলের স্বর্ণ রেনু
হাওয়ায় হাওয়ায় ভাসে।

সূর্য মামার হলুদ আদর
কপাল ছুঁয়ে যায়,
ঘুম পরীরা চলে গেছে
দূরের কোন গাঁয়।

ময়ূর কোথায় কাকের কাকা
সারা সকাল জুড়ে,
স্বপ্নে দেখা ময়ূর কনে
হারিয়ে গেছে দূরে।


 নীল পায়রা

স্বপ্ন পুরীর নীল পায়রা
মেললো ডানা বুঝি
উড়ে গেলো ধূসর বনে
এখন কোথায় খুঁজি।

নীল পায়রা যেয়ো নাতো
সবুজ বাংলা ছেড়ে
তুমি গেলে স্বপ্ন আমার
নেবে শকুন কেড়ে।

জলপাই এর পাতা মুখে
পায়রা তুমি এসো
পথের পাশের খোকনটাকে
একটু ভালোবেসো।





 ভূত

আজ কাল ভুত গুলো
নানা রূপ ধরে
মাঠে থাকে ঘাটে থাকে
যাকে ওরা ঘরে।

কখন কোথায় থাকে 
বুঝা নাহি যায়
ভূত গুলো ঘুরে ফিরে
চলে পায় পায়।

কখনও বা গরু হয়
কখনও ছাগল
কুকুর বেড়ালও হয়
কখনও পাগল।

বুড়ো হয় বুড়ি হয়
কখনও যুবক
গান গায় ভাটিয়ালী
ভাঙরা ও রক।

আজকাল ভূতগুলি
খুবই আধুনিক
পান খেয়ে পিচ করে
ফেলেনাতো পিক।

স্যুট টাই পরে ওরা
পরে ম্যাক্সী
চিড়িয়াখানায় যায়
চড়ে ট্যাক্সি।

চাইনীজ থাইফুড
ওসব ও খায়
ভালো কোন ছবি এলে
সিনেপ্লেক্স যায়।

খেলে ওরা ফুটবল
ক্রিকেট ও খেলে
কি জানি কি হয়ে যায়
ম্যারাডোনা পেলে।

আজকাল ভুতরাও
রাজনীতি করে
মন্ত্রী এমপি হয়
এই ওই ঘরে।

আজকাল কিছুতেই
নেই কারো হুশ,
দেশটা চালাচ্ছে কে
ভুত না মানুষ?


 
একজন গৌতম

গৌতম বসু হলো নাম ছেলেটার
কোনই খবর নেই মা ও বাবার।
হোটেলে কাজ করে হোটেলেই খায়
পূজো এলে একসেট জামা প্যান্ট পায়।

সকাল দুপুর রাত কাজ শুধু কাজ
ভীষন মলিন তার শরীরের সাজ।
বড় বড় চোখ দুটি ক্লান্ত ভীষণ
মনটা খারাপ থাকে সারা দিনক্ষণ।

জানতে চাইলে কিছু বিষন্ন হাসে
এলাকার লোকজন ওকে ভালোবাসে।
টিভির শো-রুমে এলে ভুলে যায় সব
মালিক দোকানে বসে করে কলরব।

ফিরে গেলে ধমকায় চড়-টড় মারে
গৌতম বসু আর কি করতে পারে।
চোখ ফেটে আসে ওর দুই ফোঁটা জল,
চোখের কোণেতে ওরা করে টলোমল।



ডিমের ভেতর ভূত

ফ্রাইপ্যান থেকে ডিম
জোরে মারে লাফ
বুয়াদের চিৎকার
এটা কিরে বাপ।

এমন কান্ড আর
দেখেনিতো কেউ
বুয়ার ছেলেটা ভয়ে 
কাঁদে ভেউ ভেউ।

আমি বলি, হ্যালো ডিম
হচ্ছে কি এটা,
ডিমটা জবাব দেয়
তুই কেরে বেটা?

আমিতো এখানে থাকি
নাম চন্দন,
ডিমের ভিতরে আছো
তুমি কোন জন।

আমিতো ভূতের রাজা
নাম টুব্বুস,
বের যদি হই তবে
জোরে দেবো ঢুশ।

রিটন ভাইয়ের সেই
টুব্বুস নাকি?
ভূতের রাজা বলে
দিচ্ছিস ফাঁকি।

ধরা পড়ে টুব্বুস
ফিক করে হাসে,
লাফ দিয়ে চলে আসে
একদম পাশে।

চট করে পুরে নেই
পকেটের মাঝে,
এরপর থেকে সে
সাথী সব কাজে।

এখানে ওখানে যাই
দুইজনে ঘুরি,
এটা খাই ওটা খাই
খাই ডালপুরি।

টুব্বুস সহ যাই
ওয়ান্ডার ল্যান্ড,
এখনতো দুইজন
ভেরী গুড ফ্রেন্ড।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন