রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০

পার্থেনিয়ামের ইতিহাস (পর্ব- ৩) ।। শঙ্কর তালুকদার


বহিরাগত জীববৈচিত্র : দেশীয় জীববৈচিত্রসমূহ এবং আমাদের সামগ্রীক পরিবেশ বিনষ্টকারী উদ্ভিদ;



         পার্থেনিয়ামের ইতিহাস (পর্ব- ৩)
                     - শঙ্কর তালুকদার 



কোথা থেকে এলো পারথেনিয়াম?: মূল বাসস্থান


পার্থেনিয়াম মূলত দেখা যায় মেক্সিকো, আমেরিকা, আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশে সহ বিভিন্ন দেশে।
 রাস্তার ধারে, বাড়ির আশপাশে, বন-জঙ্গলে বা ফসলের মাঠে এই গাছ হয়ে থাকে।

পার্থেনিয়াম বা পার্থেনিয়ন (প্রাচীন গ্রীক ভাষায়) আসলে প্রাচীন পারগামামের নিকটবর্তী প্রাচীন ম্যাসিয়ার একটি শহর ছিল; ঐ শব্দটাই পার্থেনিয়ামের নামাকরণের সাথে জুড়েছে।




মাউন্ট পার্থেনিয়ন (প্রাচীন গ্রীক ভাষায়) বা পার্থেনিয়াস বা পার্থেনিয়াম) ("ভার্জিনের মাউন্ট", আধুনিক গ্রীক ভাষায় যা "পার্থেনিও") গ্রীসের পেলোপনিসের আর্কিডিয়া এবং আরগোলিসের সীমান্তে অবস্থিত একটি পর্বত যার উচ্চতা 1,215 মি। এটি উত্তর-পূর্বে অ্যাক্লাদোক্যাম্পোস এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে পার্থেনি গ্রামগুলির মধ্যে অবস্থিত। এটি ত্রিপোলি থেকে 16 কিমি পূর্বে রয়েছে।

        গাছের বিস্তার

 এর বীজ খুবই ছোট। সাধারণত গোবর, গাড়ির চাকা, পথচারীদের জুতা, সেচের জল ও বাতাসের সঙ্গে এর বিস্তার ঘটে। এই গাছ বিদেশ থেকে আমাদের দেশে আমদানি হয়েছে। নিন্দুকরা বলেন, তৎকালিন সময়ে বিদেশিরা নাকি এই গাছের বীজ ভারতে রপ্তানি করা গমের সঙ্গে মিশিয়ে এদেশে পাচার করেছিল। এই গাছ থেকে সৃষ্ট রোগের ঔষধ নাকি ঐ বিদেশিদের কাছেই ছিল। সেই ঔষধ বিক্রীর জন্যই নাকি এদেশে গাছ পাচার হয়েছে। 


পার্থেনিয়ামকে ‘কংগ্রেস ঘাস’ বলা হয় কেন?


পার্থেনিয়াম ফুল গুলিকে সাদা টুপি পরিহিত কংগ্রেস কর্মীদের মতো দেখতে লাগে বলে এই গাছকে ‘কংগ্রেস ঘাস’ বলে। আবার অন্য মতও রয়েছে। ১৯৫০ সালে দুর্ভিক্ষের সময় কংগ্রেস আমেরিকা থেকে গম আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছিল। সেই গমের মধ্যেই অশুভ চিন্তায় ভয়ংকর পার্থেনিয়াম বীজ মেশানো ছিল, যা ধীরে ধীরে  ৬০-৭০ বছরে ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। অতি সুফলা জমিগুলি এই দখলকারী ও প্রচন্ড ক্ষতিকারক এই গাছটি ছড়িয়ে পড়ে। একদিকে যেমন কৃষি জমির প্রভূত ক্ষতি করছে, অন্য দিকে তেমনি এটির দেহের বিভিন্ন রকম অস্বাস্থ্যকর প্রভাবে জনস্বাস্থের   ভয়ানক ক্ষতি করে আমাদের জীবনযাত্রায় Biological war বা জৈবীক বিশ্বযুদ্ধ ডেকে এনেছে  । তাই মানুষ এই ঘাসের নাম দিয়েছিল ‘কংগ্রেস ঘাস’। যদিও এর সত্যতা গবেষণা সাপেক্ষ।




পার্থেনিয়ামকে ‘গাজর ঘাস’ বলা হয় কেন?

গাছটি জন্মানোর পর দেখতে গাজর গাছের মতো লাগে। তাই এই গাছকে ‘গাজর ঘাস’ বলা হয়।

এই গজার ঘাস ভারতের সবচেয়ে সাধারণ আক্রমণাত্মক প্রজাতি। পার্থেনিয়াম হিস্টেরোফোরাস উদ্ভিদ প্রাণিসম্পদে দুধের রোগ সৃষ্টি করে এবং মানুষের শ্বাসকষ্টের জন্যও দায়ী।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন