বিন্দু ঘটক
ইন্দুপুরের বিন্দু ঘটক
লকডাউনের বাজারে;
খোঁজ এনে দেন পাত্রপাত্রীর
বকশিস নেন হাজারে।
দেখা-শোনা হয়ে গেলে
আসে যদি পছন্দে;
বিন্দু ঘটক হরেক নাটক
করেন নানান ছন্দে।
পাত্র নাকি দারুন ভালো
মিলবে না এ তল্লাটে;
এমন ছেলে একটা মেলে
থাকলে লেখা লল্লাটে।
কনের বাবার মন ভরিয়ে
বরকে ডেকে একলা;
বলেন, ভায়া-এমন মেয়ে
পাবে না আর, বুঝলা।
দেখতে যেমন, গুণও তেমন
পড়াতেও ফাস্ট ক্লাস,
মার্কস যদি দিতে বলেন-
সবই তো 'এ' প্লাস।
ছাঁদনাতলায় চার চোখের
হলেই শুভদৃষ্টি;
বিন্দু ঘটক ফেরেন ঘরে
হাতেই নিয়ে মিষ্টি।
শুভ জন্মদিন
ফড়িং -এর জন্মদিনে
বাগুইহাটির মাঠে,
এক এক করে হাজার দশেক
মশা-মাছি জোটে।
বেলুন আনে প্রজাপতি
গুবরেপোকা কেক,
জলার ধারে গান ধরেছে
গোটা দশেক ভেক।
ঢাকা থেকে মিষ্টি এল
খুলনা থেকে ফুল,
চট্টগ্রামের ফেরেস্তারা
দিল হীরের দুল।
ভোজের পাতে ফুলকা লুচি
ইলিশ ভাপার সাথে,
তেলাপোকা পান সাজিয়ে
দিল সবার হাতে।
খাওয়ার শেষে সবাই বসে
বাজিয়ে হাজার টিন,
গান ধরেছে ঝিঁঝিঁ পোকা
শুভ জন্মদিন।
রাজার অসুখ
বলব কী আর রাজার কথা
চাইছি না তো বলতে;
পেটের ব্যামো,হাঁটুর ব্যথা
পারেন না তো চলতে।
তার উপরে বুকের মাঝে
হাপর হাঁপায় রাতে;
তেঁতুল খেলে একটু সারে
গরম গরম ভাতে।
রানী মা তো কেঁদেই সারা
ভাত খায়নি দুপুরে;
মরতে নাকি গিয়েছিলেন
ডুব দিয়ে ওই পুকুরে।
অনেক করে বুঝিয়ে তাকে
ফিরিয়ে এনে ভোরে;
মন্ত্রী-সান্ত্রী , দাসদাসীরা
বসিয়েছেন দোরে।
রাজপুত্তুর নেয় না খবর
ফ্ল্যাটে, রাজারহাটে;
মোবাইলে গেম খেলে তার
দিন-রাত্তির কাটে।
বাবার অসুখ, মায়ের কাঁদন
রাজকন্যা ভাবছে না;
টিকটকের ড্যান্সটা আজও
তেমন লাইক পেল না।
রাজার অসুখ ভাববে রাজা
কাঁদলে কাঁদুক রানী;
বয়েই গেছে ছেলে-মেয়ের
ভাবতে এত্তোখানি।
রথের মেলা
আচ্ছা বাবা, আজকে বুঝি
রথের মেলা যাচ্ছি না;
কেমন যেন থমথমে সব
সাড়া-শব্দ পাচ্ছি না।
মনে পড়ে গত বছর
রথের মেলায় গিয়ে;
এনেছিলাম ফুলের চারা
ময়না আর টিয়ে।
দিদি খেলো পাপড়ভাজা
চাউমিন আর রোল;
রাঙাদাদা নাগরদোলায়
বাঁধিয়েছিল গোল।
ভুলে গেছ সে সব কথা
মনে বুঝি পড়ছে না;
নাকি কোনো বিপদ বুঝে
মনে করতে চাইছে না।
এ সময়টা কেমন কেমন
ভয় পিছু ছাড়ছে না;
ঘরের মাঝে থাকতে বসে
সত্যি, ভালো লাগছে না।
আসছে বছর যাবই যাব
রথের রশি টানব;
ফলের চারা, ফুলদানি আর
মাটির পুতুল কিনব।
খুকুর ছবি
আঁকার খাতা ফুরিয়ে গেছে
কবে থেকে বলছি।
বললে বাবা, সবুর করো
কাল -পরশু আনছি।
কাল-পরশু, কাল পরশু
মাস খানেক শুনছি;
ঘরের কোণে বসে বসে
আমিও দিন গুনছি।
বললে খুকু, চাঁদ আঁকব
ফুল পাখি আর নদী;
সেই নদীটা পাহাড় থেকে
বইবে নিরবধি।
নদীর ধারে গাছ থাকবে
দুলবে হরেক ফুল;
উড়বে হাওয়ায় গাঁয়ের মেয়ের
মেঘের মতো চুল।
আঁকার খাতা এনে দিয়েই
বাবা বলেন হেসে-
ও খুকু তুই ফুল গুঁজে দিস
ওই মেয়েটির কেশে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন