লকডাউন-এক
লকডাউনে বাপির সিকিউরিটির চাকরিটা গেছে।সে এখন গভীর অবসাদে। তিন মাস লকডাউন হতে চলল,এখন সংসার চলে না। শুয়ে শুয়ে চোখে পড়ে মাকড়সা সারাটাদিন ধরে জাল বুনে যাচ্ছে খাদ্য সংগ্রহের জন্য। পোকামাকড় যা আটকে পড়ে তাতে তার খিদে মেটে। তারজন্য কত পরিশ্রম তার।
পরদিন বাপি ঘরের সামনে সব্জির দোকান দিল।
লকডাউন -দুই
আমাদের বাড়ির কাজের মেয়ে অরুণা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যেতেই লকডাউন শুরু হয়ে যায়। দু'মাস পর তাকে ফোন করলে সে জানায়: " বৌদি আমার মেয়ে হয়েছে।"
-- তাহলে তো একটা ভালো দেখে না রাখলে হয়।
-- হ্যাঁ, বৌদি, নাম রেখেছি তো। "করোনা"।
লকডাউন -তিন
লকটা খারাপ।স্ত্রী বলেছিল: লক করো না। আজ বাইরে যেতে গিয়ে দেখি, লকটা খুলছে না। পরক্ষণেই মনে হল: ওহ্, এখন তো লকডাউন চলছে।
লকডাউন-চার
পাশের বাড়ির সুদর্শন অলস, বেকার।স্ত্রী শিক্ষিকা।প্রতিবার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর মিসক্যারেজ হয়ে যায়।ডাক্তারের নির্দেশ, একদম বেডরেস্ট।লকডাউনে রান্না, কাজের মেয়ে সব বন্ধ।
-- সুদর্শন, কেমন আছিস?
-- বিন্দাস
-- সে কি?
-- হ্যাঁ, কাকাবাবু, করোনার পজিটিভ দিকটা দেখুন। চিরকাল অলস আমি এখন বাজারহাট রান্না ঘরমোছা বাসনমাজা ও স্ত্রীর পরিচর্যা করে বেশ আনন্দেই আছি।
লকডাউন-- পাঁচ
সহপাঠী শিশির গ্রামেই থাকে।লকডাউনের পর অনেকদিন কথা হয়নি। আজ ফোন করলে তার স্ত্রী জানালো, "সে নেই"।আমি বলি: ওকি লকডাউনের মধ্যেও আড্ডাটা ছাড়তে পারলো না?ফিরলে ফোন করতে বলো। ওপার থেকে ক্ষীণ কন্ঠে উত্তর এলো: নেই মানে,একমাস হল তিনি করোনায় মারা গেছেন। আমি তো বাকরুদ্ধ।
যেকোনো বিভাগে অপ্রকাশিত লেখা পাঠান
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail.com
বেশ লিখেছেন গল্পগুলো। তবে শেষ গল্পটায় মন খারাপ হয়ে গেল।
উত্তরমুছুন