চুপ বললেই ঘুমিয়ে থাকব, না হয় চোখ বুজে,
থামো বললেই আর কলম চলবে না,
ঝাঁপ ফেলে দেব যত লেখালেখির,
কুলুঙ্গিতে তুলে রেখে দেব খানকতক ডায়েরির ভূজ©পত্র,
জোর করে দাবিয়ে রেখে দেব সব মনস্কামনা,
ভরপ্রভাতে পাতব শরশয্যা,
মায়ের কোলে লুকাব মুখ, রক্তাক্ত হতে দেব আঙুলগুলোকে;
বাবার হাতের পরশ চাইব ভীষণ গভীর হাওয়ায়।
অযান্ত্রিক বাতাসে প্রাণ ভরে নেব বিষাক্ত নিঃশ্বাস,
পারি কিন্তু করছি না – এ যন্ত্রণা বুঝতে দেব না তোমায়।
কষ্ট হলেও দেখাব না চোখদুটো ভিজে যাচ্ছে; আর
সেই এক শঙ্খচিল
এখন আর সমুদ্রে নোনাস্বাদ পাই না,
শেষবেলায় দেখেছিলাম এক শংখচিল পিছন হপ্তায়,
তার পর থেকে শুধুই নাবিক-উন্মনা হাওয়া-ই পেয়েছি,
আর দেখতে পাইনি কোন শঙ্খচিল; শত চেষ্টাতেও।
মনে হয় ওটাই শেষ শঙ্খচিল ছিল।
অথবা প্রেয়সীর চলে যাওয়াটা, এইভাবে, মেনে নিতে পারেনি।
চলে গিয়েছিল, মনে হয়, আমাকেই অভিবাদন জানিয়ে।
তবুও তো কত নগ্ননাবিক আটমাস সমুদ্রে ভেসেও স্নান শেখে না,
প্রতিটি বন্দরের স্ত্রীরা চুম্বন দিতে চায়; শরীরে শরীর চায়,
তবু বাসে কি ভাল সেই নাবিক কাউকে? নাকি শুধু বাসার অভ্যেস?
সেই শঙ্খচিল হয়ত আজও আছে; শেষ শঙ্খচিল; বিশ্বাস আমার।
দূরাগত কম্পাস; লাইট-টাওয়ারের আলোর পথ ধরে,
সে আলো তো স্থির নয়, সতত ঘূর্নায়মান;
আছে, সে শঙ্খচিল আছে ঠিক ১৮০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে; আমার বিশ্বাস।
তাকে খুঁজতে নেই; মন ফেরালেই সে আশ্বস্ত হয়।
সেই বছরের মেয়েটা
বুড়ি ছোঁব কি ছোঁব না ভেবে গিয়েছিলাম বুড়িসাগরের জঙ্গলে,
তখন বিকেলের করোটি আকন্ঠ পান করেছে গোধূলি,
চৈত্রের হাওয়ার মতো হাত ধরা ছিল সেই বছরের মেয়েটার,
আঙুলে আঙুল টোকা, বিদ্যুৎ নিহিত শরীর,
মুখের আবছায়া আমাকে শুধোয় – তুমি একা?
তুমি ছিলে, তুমি আছ আজও এ নরকবাসে,
আগুন ঢেলো না আমার পবিত্র শরীরে,
অনাবৃত ঢেউ বুড়ি ছুঁয়ে যাচ্ছিল জঙ্গল আগলানো রাতে।
যদি একাই হবে তবে যা পারো দিয়ে যাও –
দিয়ে যাও অকৃপণ হাতে, ভালোবাসা বা উন্মুক্ত বুক – যা খুশী।
একটা কবিতা প্রসবের আশঙ্কায় সারারাত্রি যাপন;
নাভিতে রেখেছি হাত সেই বছরের সেই মেয়েটার,
ছন্দে ফিরে আসতে চাওয়া ভীষণভাবে আমার,
শুষে নিতে চাওয়া যাবতীয় জংলী ক্রোধ-অহংকার;
ফিরে আসতে হয়েছিল স্তন-লোভী শিশুর মত নাগরিক কাদামাটিতে।
ওর মুখের আবছায়া আমাকে শুধোয়, সেই শেষবারের জন্য – তুমি একা?
আজও একটা নিঃসঙ্গ কবিতা লিখতে পারলে ভাবি;
বাঃ,দারুণ! 👌
উত্তরমুছুনতোমার কবিতাগুলো মন দিয়ে পড়লাম। খুব ভালো লাগলো। এমনিতেই তোমার কলম পাঠকের মলম। তোমার শব্দের শরশয্যায় শুয়ে পূর্ণশান্তি। ভালো থেকো। সুস্থ থেকো।
উত্তরমুছুন