সোমবার, ২২ জুন, ২০২০

নির্বাচিত কবিদের কবিতাগুচ্ছ


                          অর্ণব পণ্ডা 



   কবিতা

ধবধবে সাদা ভাত ধবধবে চিন্তার সমান।
ধোঁয়া লেগে থাকা ভোর
ভেতরে সাইকেল চালিয়ে কেউ যায়...
ঝোলানো দুধের ক্যান,এশহরে শিশু আর বুড়ো
জেগে ওঠে সমান সময়।

জেগে থাকে চিরকাল স্তব্ধ করিডোর

ওদিকে প্রসূতিঘর, এদিকে পুরুষ।
কারুর বাড়ির ছাদে সারারাত পাজামা-পাঞ্জাবী,
তুলে নিতে ভুলে গেছে কেউ।
অনিবার্যভাবে সে কি ফিরে আসবে খালি আলনায়
যেভাবে ফিরেছ তুমি,কবিতা?

অলংকরণ- বিমল মণ্ডল  




   বালিশ

শিশুর বালিশ দেখি।
সরষে দিয়ে তৈরি এই বালিশের মধ্যে
ছোট অর্ধ গোল গর্ত।
মাথা তুলে শূন্যতাকে স্পর্শ করি। 
টের পাই হালকা ব্রহ্মতালু
দপদপ করছে সারাক্ষণ।

তারাভরা মহাকাশ
ব্রহ্মরন্ধ্রে অজস্র জোনাকি...

অলংকরণ- বিমল মণ্ডল  



   সন্দেহ

ছোট একটা কাঠের ব্রিজের ওপর থেকে তুমি ডাকছ।
আমি অনেকদিন আগে কেটে নেওয়া সামান্য গাছের গুঁড়ি
শেকড়সমেত উপড়ে আনতে চাইছি
মাটির ভেতর থেকে।শাবল হাতে নিয়ে
শেকড়ের চারদিকে মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে আমি চলেছি...
তুমি ডেকে ফিরে যাচ্ছ ব্রিজের ওপর দিয়ে।

ঠিক মাঝরাতে ,চাঁদ নয়,বড় একটা ঘড়ির ডায়াল
ঝুঁকে পড়ল মুখের ওপর। আমি টের পাচ্ছি আবার
দীর্ঘ ঠান্ডা লোহার শাবল উঠে আসছে আমার হাতে।

অলংকরণ- বিমল মণ্ডল  



  বাবা

যুবা লোকটিকে পেছন থেকে দেখতে পাচ্ছি।
হাঁটুর ওপরে ধুতি, ঘামে লেপ্টে আছে পিঠে পাঞ্জাবি।
মাথায় পুঁটুলি, আজ হাটবার।

পথশ্রম; গাছের তলায়।একটু বসে, হাত দিয়ে
দেখছেন পকেট, পাঞ্জাবির।আছে।
বোবা সন্তানের জন্য একমুঠো লজেন্স ও টফি।

লোকটিকে সর্বদাই পেছন থেকে দেখতে পাচ্ছি।
তাঁর পাঞ্জাবির পকেট থেকে বারবার উঁকি দিচ্ছে
টফি বা লজেন্স নয়, একমুঠো কিচিরমিচির পাখি!





যেকোনো বিভাগে অপ্রকাশিত লেখা পাঠান
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail.com       


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন