বৈদূর্য্য সরকার
তৃষ্ণা
একগ্লাস ঠাণ্ডা জল... গ্রীষ্মকালে, রোদ থেকে ফিরে
ঢকঢক করে 'আহঃ' সহযোগে
খাওয়ার সময় নিস্তব্ধে লক্ষ্য করে দেখলাম
পাত্র যতো ফাঁকা হতে থাকে
গ্লাস এবং মাথা সামান্য হলেও উঠতে থাকে ওপরে,
তবে কি খালি পাত্রের আওয়াজের মতো
ঔদ্ধত্যও বেশি...যা দেখছি চারপাশে।
পরমুহূর্তেই মনে হল -রিফ্লেক্স কিংবা অভ্যেস,
সামান্য একগ্লাস জলে কী এমন দর্শন থাকে?
সেটার অর্ধেক ভর্তি নিয়ে চলা কাহিনী ফুরিয়ে গেছে
এখন সর্বত্র খালিদের ভরাট দেখানো খেলা।
কিরোর মতে
কারো জন্মছকের ভেতর বৃষ্টি থাকে
কখনও আবার মেঘ কিংবা শীত
একজন বলেছিল রোদের জাতকরা
বাকীদের থেকে শক্তিশালী হয় -
তাই তো বড় বড় লোক বোশেখজষ্টিতে...
আর আমরা পলকা বসন্ত জাতক হয়ে
সব গরমের সামনে দাঁড়াই মাথা নীচু করে,
সবিস্ময়ে দেখে যাই সাফল্য কাকে বলে ।
বস্তুত, আমরা জন্মছক খুলে বসে
ব্যর্থতার খতিয়ান দেখি আর
আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকা টিকটিকি
দেওয়াল থেকে ঠিকঠিক বললে,
শুনে ফেলি দৈবাবাণী...।
আসলে বিশ্বাস বস্তুটাও আমাদের
জন্মছকের মতোন... কাহিনী হিসেবে লেখা থাকে ।
আয়ুর অশ্ব
অশ্বমেধের দামাল ঘোড়া দু'পা সামনে উঁচিয়ে
কেশরে হিল্লোল নিয়ে বলতে চেয়েছে
ততোদিন দৌড় যতক্ষণ না সবাই
রাজার বশ্যতা মেনে নেয়।
তার জানা ছিল,
বিরোধী পক্ষের তীর থেকে বাঁচলেও
নিজের রাজার কোপ থেকে
বাঁচে না কেউ অন্তিমে...
যুদ্ধে, কালো ঘোড়াদের পক্ষ অবলম্বন বিষয়ে
আমরা সবাই ধোঁয়াশায় থেকে গেছি বরাবর !
আবিষ্কার
এতদিনে বুঝে গেছি
ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া, বড় ভাল কথা নয়
সেজন্যেই আমাদের ইতিহাস লিখিত ছিল না,
দুনিয়াকে কল্পনা করার সুযোগ দেওয়া হল
আসল সত্যিও বেরোলো না
চাপা পড়া কথাবার্তা একদিন যে বেরোবে, তাতে
সংশয় ছিল না কারো...
তাই আমাদের সব থেকেও কিছুই থাকল না চোখের ওপর, থেকে গেল মিথে ও মনের মধ্যে ।
আপনি যাকে একটু করে খুঁড়ে বের করবেন
আগামীতে, কোন হারানো পথের সন্ধানে বেরিয়ে ।
বৃষ্টির গান
সকাল থেকে মেঘ করলে, সন্ধেবেলা এসে ঢোকে
মাথার ভেতর, সন্ধে মানে আবছা আলোর
সন্ধে জানে -সিধে রাস্তা ট্যাভার্ণ ফেরত...
যেখানে সব বুড়োটে লোক মান্না দে'র গান গায়
আর দুঃখ বাড়ে ।
ক'জন জানে কোথায় যাবে, হারিয়ে আবার ফিরে পাবে
বৃষ্টিবেলা বাঁচার দমক !
যেকোনো বিভাগে অপ্রকাশিত লেখা পাঠান
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail.com
Besh
উত্তরমুছুন