রঞ্জন ভট্টাচার্য
হাতটি ধরে
এমন আঁখিতে যদি কাজল না থাকে
সে আঁখি বল কার ভালো লাগে!
ও ঠোঁট যেন রক্তগোলাপ
চাইনি তো আর করতে আলাপ।
ওই দেখো টোল পড়া ছোট্ট চিবুক
ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি তাই আমি যে ভাবুক।
ওই প্রশস্ত ললাট যেন
লেখা আছে জীবনের সব পাট
তোমার সে নাক টিকালো এত
আদরের ছটা যেন ফুটেছে যত।
আর যতসব না থাক এমন
ক্ষতি কি তুমি তো ছিলে
আমার কাছে সেই আগে যেমন।
না ছিল আমার এতোটুকু গুন
না ছিল আমার সুমধুর সুর
ছিল না আমার গানের গলা
তবু পেয়েছি তোমায় আমার
এ পথ চলা।
সে চলার পথেই তুমি
আমার দেখা
চলার বাকি যা কিছু
তোমাতেই শেখা ।
তোমার সেই বাহুডোর
আজও মনে পড়ে
তাইতো আমি পথ চলি তোমারি হাত ধরে।
জানি চিরদিন থাকবে এমন করেই
যদি এসে যায় যমদূত হঠাৎ করে রে
রুখে দাঁড়াবে তুমি আমার হাতটি ধরে।
সামনে রয়ে যাবে চিরকাল জানি
এমনি করেই যেন বন্ধু মানি।
জীবনটাকে বাঁচিয়ে রেখো
মন পাখিটা আবদ্ধ যে ঘরের কোণে
সইছে না আর ভীষণ জ্বালা ব্যাকুল মনে
কি করি তাই ভেবে না পাই
ঘর ছেড়ে গো কোথায় পালাই
বিশ্বব্যাপী লাগছে আঘাত মানুষ মরছে ধনে প্রাণে।
তবুও তো সইতে হবে আরো ক'দিন এমনি করেই
সমাজবদ্ধ যুক্ত তুমি থাকতে হবে বদ্ধ ঘরেই।
হাতের কাছে যাই আছে
যত্ন করে রেখো কাছে
মরতে হবে না ভেবেই জিততে হবে যুদ্ধ করেই।
এমনি করেই দিন চলে যাক কয়েকটা দিন আর সবুর করো
হাতে হাত না রেখে ভাই হৃদয় জুড়ে আপনি ধরো
কাকতালীয় ব্যাপার বটে!
যা ঘটে তাই আপনি ঘটে
ভয় পেয়োনা সাহস ভরে মনের মাঝে সব ধরো।
মনের মাঝে ভরসা রেখো হৃদয় দিয়ে চিনতে শেখো
ঘর ছাড়লেই বাড়বে বিপদ ঘরের মাঝেই বন্দী থেকো
এমনি করেই চলো যদি
থাকবে ভালো নিরবধি
তোমরা সবাই জ্ঞানী মানুষ জীবনটাকে বাঁচিয়ে রাখো।
সুখ-দুঃখ -শোক
এ কেমন সকাল এলো
শুধু মৃত্যুর কোলাহল !
এ কোন্ সকাল এলো
যেন জ্বলছে যে অনল।
কি কোন্ দুপুর এলো
চারদিকে হাহাকার !
দাবদাহ নেই তাতেও যেন
সব পুড়ে ছারখার।
কেমন বিকেল দেখো
নেই মৃদু সমীরণ !
শুধু শুনি গেল গেল
আর চাপা গুঞ্জন!
এলো গোধূলির চাঁদের আলো
নেই তো স্নিগ্ধ মায়া!
পিছু ডাকে যেন যমদূত আর
সেজে মৃত্যু কায়া।
তবু আমরা থাকবো বেঁচে
এই পৃথিবীর বুকে,
মানুষ হয়ে মানুষের পাশে
সুখ- দুঃখ - শোকে।
প্রেমপর্ব
বসন্তে আজ চলেছে প্রেমপর্ব
বুক ভরেছে আনন্দে আর
মনেতে খুশির গর্ব।
বসন্ত কি ফুরিয়ে গেলে
ভালোবাসা হবে খর্ব?
কেউ বলে ভাই দারুন লিখেছো
জুড়িয়ে গেল মনটা
কেউবা বলে সাবাশ বন্ধু
শ্রেষ্ঠ লেখা কোনটা?
কেউবা বলে আহা মরি মরি!
ডুবেছি নতুন প্রেমে
অনেকে আবার নতুন করে
প্রেমের কবিকে চেনে।
আমি তো হেসেই খুন হয়ে যাই
শুনে সে সব কথা
সুখ সাগরে ডুব দিয়ে ভাই
দূর হয়েছে ব্যথা।
জানিনা এমন ক'দিন যাবে
এই ধরণীর বুকে
তোমরা সবাই ভালো থেকো ভাই
আর থেকো মহাসুখে।
ক্রীতদাস
পরিযায়ী বলে এত হেলা ফেলা
আমরা মানুষ নই ?
এ টানে এ দিকে, সে টানে ওদিকে
শুধু টানাটানিতে রই।
আমরা এখন যাযাবর শ্রেণী
আদিমের কথা মনে ...
বাঁচাও দাদা এই অভাজনে
বলি শুধু জনে জনে ।
হেঁটেই চলি শতশত মাইল
খুঁজে নিতে ভিটেমাটি
অভুক্ত হয়ে মরে যে শিশু
পেটে গামছা বেঁধে হাঁটি ।
সুখ রাস্তায় কেউ কেউ দেয়
এক ফোঁটা জল মুখে
সেটা পেয়েই পথ চলা ভাই
দিন যায় ভারী সুখে ।
তোমরাই বল আমরা নাকি
দেশের মূল শক্তি
তবে কেন এত ভাবেতে গলদ
গদগদ করে ভক্তি !
এটা কি শুধু মুখের কথাই
কথাই মর্ম সার?
তাই কি এত কানে কানে সব
করছো যে দরবার!
আমি মনে করি আমি এক
সুদূর প্রবাসের পাখি
তবু কেন তোমরা আমায়
কর যে ডাকাডাকি ?
খুঁটে খুঁটে খাই মজুরি যা পাই
দিন চলে যায় বেশ
বিপদের দিনে তোমরা কেন
রাখো না যে অবশেষ ?
তবুও আমরা চিরদিন বাঁচি
এই বিশ্বের বুকে
আমরাই পারি সব কেড়ে নিতে
পারি সব দিতে রুখে ।
এখনো সময় আছে যে বন্ধু
ঘুম থেকে ওঠো জেগে
সময় থাকতে বাঁচাও সে পাখি
দোরে দোরে ভিখ মেগে ।
আমি ও আমরা চিরদিন আছি
তোমাদের দাস হয়ে
মনের পাতায় রয়ে যাবো শুধুই
সেই ক্রীতদাস হয়ে!
লেখা পাঠান
অভিমত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন