।। মার্চ সংখ্যা।।
।। ফাগুনের আগুন ও বসন্তের উপহার-২০।।
অর্ণব মিত্র -এর কবিতা
১.
ফাল্গুন মাসে
ফাল্গুন মাস এলে মনে পড়ে সেদিনের কথা
হাঁটতে হাঁটতে রেল-কোয়ার্টার-এর ধারে এলাম আমরা,
লাল মাটির উপর এলমেলো জমে থাকা
শুকনো বিবর্ণ পাতার মানচিত্রে
গাছের ধারে অন্ধকারে একটি গরুর
জাবর কাটার আওয়াজ শুধু আর
চারিদিকে নীরবতা,
এই জায়গাটা নির্জন দেখে
ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম,
দূরে রেললাইনের ওপারের গোলাপি আকাশ
ডুবে যাচ্ছে অন্ধকারে,
জড়িয়ে ধরতে চেয়েছিলাম তোমার কোমর
পেতে চেয়েছিলাম তোমার স্তনের স্পর্শ,
আর তুমি হাতের নাগাল সরিয়ে
চলে গেছিলে একরাশ যৌবন নিয়ে,
সেদিন টিউশন থেকে ফেরার সময়
আবার ওই জায়গাটা হয়ে এলাম,
দেখি গাছের তলায় কি অন্ধকার
আর ভেসে এল আমার বন্ধনমুক্ত করা
তোমার সেই গলার আওয়াজ
‘আমায় বিয়ে করবে তো!’
২.
ফাল্গুন মাসের নির্জনে
উঁচু রেললাইন ধরে দূরে মিলিয়ে যায় মেদিনীপুর লোকাল
বাতাসে তার আসা যাওয়ার শব্দের রেশ মিশে আছে,
মার্চ মাসের হাল্কা গোলাপি রোদে
রেল-কোয়ার্টার সামনে দিয়ে
লাল মাটির পথ জুড়ে
এলোমেলো পড়ে থাকা শুকনো বিবর্ণ পাতা
হাওয়ায় সরে সরে যায়।
দেখি বারান্দায় শাড়ি দুলছে
আবছায়া ঘরে কার যেন ছবি টাঙানো!
রাখা আছে চা-এর বাসন,
মৃদু শাসন ও বাচ্চাকে স্নান করানোর আওয়াজের সাথে
ভেসে আসছে রান্নার শব্দ,
একটি গরু বসে আছে
গলির মুখে সেই নিম গাছের নির্জনতায়।
এসেছিলাম বহু বছর পরে
সেই পুরনো পাড়ায়
তবে চেনা কেউ চোখে পড়ল না,
অতনুদের বাড়ি ছিল ওই পুকুরের ধাঁরে
সে এখন কোথায়
চেন্নাই না বাঙ্গালোরে!
ওরা কি বহুবছর আর বাড়ি আসেনা!
এই রেল-কোয়ার্টারে কারা থাকত আগে!
নিস্তব্ধ দুপুরের বারান্দাগুলো কার অপেক্ষায়!
কবিতা দুটির চিত্র -কল্পনা মন টানে, আর টানে হতাশা আর আশার দোলাচল - যেটা যৌনতা থেকে ভবিষ্যতের সুরক্ষার ইঙ্গিত করে।
উত্তরমুছুনদুটি কবিতাই খুব সুন্দর। ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুন