রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

অমর একুশে।। নিবন্ধ-৪ ।। আন্তর্জাতিক ভাষা একুশের আদর— অলক জানা।। Ankurisha।। E.Magazine।। Bengali poem in literature।।

 




নিবন্ধ-৪


আন্তর্জাতিক ভাষা একুশের আদর 

অলক জানা 


তেমন কিছু কথা ছিল বলেই না পরস্পরকে আমরা বুঝতে শিখেছি। সেই রেশ ধরে যতটা নিকটে এলে নিজেদের ছোঁয়া যায় সেই কথার নিবিড় আত্মঘ্রাণে শুদ্ধ হয়েছি। এ তো কম সুখকর নয় ? নদী প্রবহমান, এটাই প্রথম এবং শেষ কথা। নদীস্নান, নদী নিয়ে আবেগ তো সহজাত উপাখ্যান। একে বাদ দিলে মানুষ ও মানুষের ঘরদোর একটি অসম্পূর্ণ আত্মীয় রেখা। এই অপূর্ণতা নিয়ে কেউ কখনো সুস্থতার ইতিবৃত্ত লিখতে পেরেছেন কিনা সন্দেহ হয়। 


কথামোহর সাজানো থাক পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশের প্রাণে-অপ্রাণে এবং চাঁদ সূর্য গ্রহ তারার মনভূম অন্দরে। তবেই না পরিতৃপ্তির অবগাহন শেষে হাওয়া ওষ্ঠ ছুঁয়ে যাবে  আরামের গ্রীবা ও গণ্ডদেশ অথবা নাভিতীর্থের ভূগোলবাদ। প্রেমের কোন বিকল্প নেই। ভাষানদী কিংবা নদীভাষা মাতৃপ্রেমের মতোই বিশুদ্ধ অহংকার। নতশিরে তার শ্রীচরণ-দ্বৈপায়নে আশ্রয় সে তো স্বর্গীয় মগ্নতা। সেই পোক্ত নেশায় প্রহরের প্রতিটি পাঁজরে লিখে রাখি স্বর ও ব্যাঞ্জনবর্ণের লিপিমুদ্রা। 


সেই আশ্চর্য উন্মাদনার শরিক তুমি হয়েছো, না প্রতিবাদ নীরবতায় মেনে নিয়েছো আমার তীক্ষ্ণ জেদের ভয়ার্ত-আমাজন দৌরাত্ম। আমার আরাম কী তোমার নয়, নাকি তোমার থেকে মুখ ফিরিয়ে সৌরসুন্দর মুগ্ধতায় আমি আলো ও তাপ ছড়াতে পারি ? সে তুমি জেনেই বসে আছো আমি তোমার কে ? পক্ষান্তরে আমার কাছে তুমি ? আমাদের একান্ত একাকিত্বে কে বা কারা সহযাত্রী হলো তা দৃশ্যপাঠের দরকার আছে বলে মনে কারিনা। 


তুমি আছো এই বেশ। তুমি আছো তবেই না শরীরের ক্ষয়-পচনকে সমর্থন করে ক্ষেপ বদলের খুটখাট সাড়া শব্দকে প্রশ্রয় দিই।

আমার বাংলাভাষা সারাদিন মেঘে মেঘে বৃষ্টির কানামাছি, আমার প্রত্যয়ের গিরিশৃঙ্গ, আমার প্রত্যাশার সরলপানা মুখ। তার জন্য আমার বুকের খুন ঝরে গেছে, খুন ঝরে যায়, আবার উঠে দাঁড়িয়ে বলতে পেরেছি অমর একুশ আমাদের আত্মপরিচয় কবচ! 


বিপত্তির বাংহিংরেজির ব্যামোয় যাদের সকাল বুড়ি-রাত হয়ে যায়, সেই স্বৈরাচারী আকাশে অহমের কলঙ্ক লেগে থাকে। সে আকাশ বাংলা বা বাংলাদেশের নয়। অন্য কোন বিপন্ন প্রজাতির আত্মহননের অস্ত্রাগার। গীতবিতানের ওঙ্কারে প্রতিদিন আমার বোধের প্রজনন হোক। আগামী পৃথিবী শোন বাংলাভাষা রক্তপুষ্ট পিরামিড, তাকে সংঘাতে কাত করার অস্ত্র যতই শানিত হোক তা কেবল ভাবনাদ্রোহ স্বেচ্ছাচার।  সত্য এটাই রক্তের কোন মৃত্যু নেই, যার প্রতিটি কণায় শহিদের শ্বাস লেগে আছে। মিশে আছে আমার ভাইয়ের আর্তি!







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন