আষাঢ়ে গপ্প কথা -১৮
দেবাশীষ সরখেল
কীর্তনীয়া
বাড়ির সবচেয়ে মেধাবী ছেলে নন্দ। প্রথমবার ডেন্টালে পেয়েছিল। সেকেন্ড টাইম বসলে অবলীলায় সে ডাক্তার হতে পারত। কিন্তু যেতে পারি ব্যান্ডের জটু যত নষ্টের গোড়া।
নন্দ সিঙ্গার,নন্দ কম্পোজার। নন্দই মধ্যমণি । সে আবার মাটির গান লেখে। মানুষের টানে গানের টানে গায়ে চলে যায়। জঠুর সাথে জল জঙ্গল ও জীবনের গন্ধ মেখে আসে।
এদিকে পরিবারে অশান্তি চরম। শিক্ষিকা দিদি রাতবিরেতে রিয়াজ জগঝম্প বাজানো তীব্র না-পসন্দ। ঘোর অনিচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছে । দাদা বৌদিকে নিয়ে ফ্লাটে । অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বাবাকে তারা বৃদ্ধাশ্রমের ভরে দিতে চেয়েছিল।
নন্দ হতে দেয়নি। বাবা মৃত্যুর আগে অর্থ-সম্পদ সমস্ত নন্দর হেফাজতে রেখে চলে যান।
দাদা দিদি আর ফিরেও তাকায় নি।
সে শুধু গান আর গান ।
প্রথম অ্যালবাম হয়ে গেল। প্রথম শো দুর্গাপুরে। ভাগ্য কত খারাপ সেদিনই অঝোর বর্ষা। রাস্তায় গাড়ি থামাতে হয়। পাশের গাড়িতে তাদের প্রথম অ্যালবাম বাজছে । জটু ছুটে যান। নিজের কানকে তারা বিশ্বাস করতে পারেন না। গাড়ির দিদিকে জিজ্ঞেস করেন ------ এ গান কোথায় কিনলেন?
বলেন - অনেক জায়গায় পাওয়া যায়। এই সিঙ্গারের প্রাণ সঙ্গীতময় । ডাক্তারি পড়া ছেড়ে এসে সঙ্গীত সাধনা করে।
যেখানে শো হবে তার কাছাকাছি গাড়ি পৌঁছে যায়। সকলেই ছাতা নিয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে।
জটু বলেন — আমার ভবিষ্যৎ বাণী ফলে গেছে রে নন্দ। কত লোক দেখ তোর গান শোনার জন্য লাইন দিয়েছে।
নন্দ হাসে। দেখবে ---এ ভ্যাকসিনের লাইন। মাথা খারাপ করো না।
না জটুর কথাই সত্য।
সো ভেঙ্গে গেলে তরুণ-তরুণীরা ছেকে ধরে।
অটোগ্রাফ চাই। নন্দ তার পদবী বদলে লেখে নন্দ কীর্তনীয়া।
তার গানের ভুবনে কত যে কীর্তনীয়া বাউল বিছানা পেতেছেন সে নিজেও জানে না।
আরও পড়ুন 👇🏾👇🏾
https://wwwankurisha.blogspot.com/2021/08/ankurisha-emagazine-bengali-poem-in.html
ইচ্ছা শক্তি প্রবল হলে ঈশ্বরও সহায় হন।একথার
উত্তরমুছুনফলশ্রুতিই আজ নন্দর জীবনে এই সাফল্য।