দুঃসময়ের কবিতা -৩৮
গোবিন্দ ব্যানার্জী
১.
ঐতিহাসিক বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞপ্তিসূচক পলেস্তারা খসিয়ে দিয়েছে বৃষ্টি
অন্ধ হয়ে গিয়েও তারা দাঁড়িয়ে আছে মধ্যরাতে,
তখনই বন্দর ছেড়ে যাবার সময় তারার দেশে
স্বপ্ন টাঙিয়ে দিচ্ছিল একদল উদ্বাস্তু ঘুমজীবন।
আর মাছেদের বিধ্বস্ত চোখ দেখে
যারা সন্ততিদের নিরামিষাশী হওয়ার মন্ত্র দিয়েছিল
তারা লুকিয়ে লুকিয়ে শব বহন করেছিল
এবং ভোররাতে মাটি ও ধোঁয়ার গন্ধ
বুকে টেনে নিয়েছিল শেষবারের মত।
ঠিক সেই সময় একটা সম্বৃদ্ধ শতাব্দী
নদীতে পড়ে যাচ্ছিল পাড় ভেঙে।
আর সেই হৈ হট্টগোলের মধ্যেই
একটা রোগগ্রস্ত সভ্যতা যৌবনপ্রাপ্ত হ'ল।
২.
এইসব খন্ডচিত্র
নরুনের তীক্ষ্ণ বাসস্থানে
বকেদের শোভাযাত্রা চলেছে
ছিঁচকাঁদুনে বিরালছানা পর্দার ওপারে।
একটা নিরেট অটোস্ট্যান্ডে বোতল উপুর ক'রে
একগুঁয়ে বসে আছে কবর খোঁড়া লোকটা।
বাতাসে অনবরত ডিগবাজি খাওয়া ছেলেটা
গতকাল মারা গেছে বলে গলি ঘুঁজি বন্ধ্ আজ,
লিকলিকে কুকুরগুলো লাইন দিয়ে হাগতে বসেছে
খিস্তি মারতে গিয়ে ঠোঁট থেকে বিড়িটা ছিটকে গেল
দমাদ্দম দমাদ্দম টিন পেটাচ্ছে কেরোসিন ডিলার
এদিকে নগর কীর্তনের দলটাকে ব্যান করা হয়েছে
একটা স্কুল বাড়িতে আগুন জ্বলছে রাত থেকে
তিনটে লাশ পড়ে গেছে ওখানে, কাল, মাঝরাতে।
গাছের মাথায় একটা শহীদবেদী বানাচ্ছে কাঠমিস্ত্রী
নিতান্তই অপারগ একজনকে সভাপতি ক'রে
অটোর মাথায় জবরদস্তি বসিয়ে রাখা হয়েছে,
তীরবেগে ছুটে চলে যাচ্ছে বাক্যালাপ
ঝোড়ো হাওয়াগুলো অপেক্ষা করছে
একটা বিস্ফোরনে হয় এস্পার নয় ওস্পার।
আরও পড়ুন 👇👇
https://wwwankurisha.blogspot.com/2021/06/ankurisha-emagazine-bengali-poem-in_49.html
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন