মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০২০

অঙ্কুরীশা-র পাতায় প্রকাশিত অন্য ক্যানভাস -এর দুই বাংলার অনলাইন গল্প উৎসব "স্বল্প কথার গল্প।"


অঙ্কুরীশা-র পাতায় অন্য ক্যানভাসএর     ২০বছর উদযাপনের বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের চতুর্থ পর্বে চলছে দুই বাংলার অনলাইন গল্প উৎসব"স্বল্প কথার গল্প।"উদ্বোধক হিসেবে পেয়েছি স্বনামধন্য কথা সাহিত্যিক সম্মাননীয় তপন বন্দ্যোপাধ্যায় কে। বিশেষ অতিথি গল্পকার হিসেবে পেয়েছি সম্মাননীয়া মৌ মধুবন্তী এবং সপ্তদ্বীপা অধিকারী কে।আজ উৎসবের ১১ দিনে আছেন দুই বাংলার দুই বিশিষ্ট গল্পকার অচিন্ত্য নন্দী এবং পারভীন সুলতানা। আপনাদের সবাইকে সাদর আমন্ত্রণ। উৎসব টি উপভোগ করুন। আপনাদের লাইক ও কমেন্ট এ আমাদের এই চলার পথ সুদৃঢ় হোক,এই আশা রাখি।

                                                  শুভেচ্ছান্তে--

  সিদ্ধার্থ সাঁতরা                      

সভাপতি,উৎসব কমিটি।

 বিশ্ব বন্দ্যোপাধ্যায়,

  সম্পা,অন্য ক্যানভাস।

   যুগ্ম আহ্বায়ক: মিতালী ত্রিপাঠী ও রীতা বেরা।

 



                             অচিন্ত্য নন্দী 

                           অনগ্রসর

উভয়ের পরিবারের অমতে অলক ও সুনন্দা বিবাহসূত্রে আবদ্ধ।  শিক্ষিত অলকের ভাগ্যে ট্রাকের হেল্পারের কাজ। সুনন্দা রাঁধুনি , পরে অস্থায়ী চাকুরী পেয়ে অনগ্রসর এলাকার ঘরে ঘরে ঘুরতে হবে। বেতন কম ,  বাচ্চা দুটোকে তো একটু পুষ্টিকর খাবারও  দেওয়া যায়। চাকুরীতে যেদিন সে যায় , রান্নার কাজে গরহাজির।গৃহকত্রী শাসায়।  প্রতিবেশীরা বলে,"কখন চাকরি করে? ঘরেই তো দেখি।"  দপ্তরে অভিযোগ জমা পড়ে।

          প্রধান তদন্তে এলে গ্রাম   ঝেঁটিয়ে সবাই হাজির। প্রধান বলে, " মেয়াছেনাটা তোদের খপর লিতে আসে ? " একজন  জানায় , " অনেকদিন পর এক দুই দিন আস্যে বটে।"

          প্রধানের ভ্রু কুঞ্চিত। একটা সাদা কাগজ দিয়ে বলে , " সবাই সই কর।"

 একজন সুধায়, " সই  ক্যানে ? "  প্রধান জানায় , "উয়ার চাকরিটো যাবেক।"

          সমাবেশ যেন গর্জে ওঠে ,  " ইটা তু্ই কি বলছু রে প্রধান ! এক মুঠা খাতে দিতে পারি না, তার মুখের খাবারটা কেড়ে লুব।"

          

           প্রধান খালি হাতে ফেরে। 





                      পারভীন সুলতানা

                            সম্পর্ক

ওর চোখের মনির কী রঙ কিংবা  গায়ের গন্ধ কেমন জানা হয়নি। তাতে কী এলো গেলো! ওদের ক্রমশ মসৃন হয়ে ওঠা সম্পর্কের আকুলতা ঠেকানো যাচ্ছে কই!

স্বামী-সন্তান অফিস,স্কুলে বেরিয়ে  যাবার পর পাওয়া ফুসরতে মোবাইলে  স্বস্তির স্পর্শ রাখে পারমিতা। স্ক্রিনে একটা সুবাসিত'good morning'   ভোর থেকে ফুলেল সুবাস ছড়াচ্ছে! এর মধ্যে রান্না-বাড়া মেয়েকে স্কুল থেকে আনার নিপুণ ঘরকন্না সামলানো। দুপুরে- একটা আকুল গলা- এ্যাই, খেয়েছো'র আন্তরিকতা আরেক দেশ থেকে পারমিতার বুকে উছলে পড়ে। বাবা- মা মারা যাবার পর ওর জন্য এমন মায়া করে কজন খোঁজ নিয়েছে ভাবতে থাকে। 

স্বামীর রোবট স্বভাবে সংসারে ঠেসে যাওয়া এক কোণে ফেইসবুকটাই কেবল বৈচিত্র্য ওর। 

 কাজ শেষে রাতের নির্জন নীরবতায় অরুপের সঘন অপেক্ষার হাতছানিকে সাড়া দেয়া।ওর ভরাট গলা আর সুপুরুষ সৌন্দর্যে ওর জন্য কী চমকায়? 

একরাতে মগ্ন কথোপকথনের ফাঁকে নির্জনতা ফুটো করে স্বামীর বুক খামচে ধরা বিবশ গোঙানির শব্দে হাতের অস্থির আঙুল অনবধানে ' 'ব্লক' অপশনে ছুঁয়ে যায় কখন টের পায়না পারমিতা।   ব্যাকুল পায়ে বেডরুমে ঢোকে দেখে দুঃস্বপ্ন দেখা লোকটা এরমধ্যেই  ঘুমে জবজবে হয়ে পড়েছে।  অপেক্ষার প্রহর গোনা দুজন  বুঝতেও পারে না 'ব্লক' শব্দ টা ওদের সম্পর্কটা কখন চিরদিনের জন্য ডিলিট করে দিলো।

 পারমিতা আবার আগের মতো চায়ে চিনি মেশাতে মেশাতে গলায় আল্লাদ ঢেলে বলে- কাল থেকে চায়ে সুগার পাবে না, তুমি কিন্তু মুটিয়ে যাচ্ছো গো।












কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন