সুতানুটি সন্ধে
বৈদূর্য্য সরকার
আয়নায় যাকে দেখি আমি নই – অন্য কেউ
ছায়া দিয়ে গড়া রহস্যময় মানুষ, জীবনযাপনে
বিপদসীমার ওপর বয়ে যায় নদী পাড় ভাঙে
সাদা কাগজ সামনে একা বসে থাকি তোমাকে হারিয়ে ।
চক্ররেলে হুইসেল শতাব্দী প্রাচীন উপেক্ষায়
পরী আর তার বয়ফ্রেন্ড নিঃশব্দে কাঁদে রাতে,
দু’দিকে বেঁকে যাওয়া গলিপথে প্রাচীন সন্ধেতে
অহেতুক পথচলা আঁধারে টেনেছে সঙ্গোপনে ।
কুকুরের মতো জীবনের জমা জল চেটে না নিতে পারলে
মেকআপ খসে থমকে দাঁড়াতে হয় খোলা আকাশের নীচে,
অভিনীত চরিত্ররা দূর থেকে মুখোমুখি হয়-
বারবার অঘটনে চুপ করে থাকা দরকার ।
গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে দূর থেকে ভাসে ঘণ্টাধ্বনি
বহুদিন জমা কিছু কথা চিরকালীন ধাঁধায়
জ্যোৎস্নামাখা শহরে দু'জন হেঁটেছি, স্মৃতি চাপা পড়ে গেলে
প্রাচীন ঝিঁঝিঁর ডাক বড় চেনা বলে মনে হয়।
নিয়ন্ত্রিত অভিব্যক্তি ইগো ভেঙে বেরোতে পারলে
তার চলে যাওয়ার দিকে চেয়ে নিঃসঙ্গ বিকেল
পার হতে হয় আলো নিভে গেলে, সাংসারিক অভিমানে
কয়েক চামচ তেল ঘি মশলা মেখে দু’চিমটে রাগ।
ঝুল বারান্দায় একা দাঁড়িয়ে থাকছি
সন্ধের শহরে অনাহুত, চারপাশের বদলে
নিখুঁত হওয়া আমার নিয়তি নয়, আজীবন
ডুবে থাকার মতো নেশায় সে থাকলে ফ্রেন্ডলিস্টে।
তার চলাফেরার পথ কখন বেঁকেছে হারিয়ে গেছে দিগন্তে,
জেগে থাকা নীলাভ আলোয় ছায়াদের চলাচলে
মৃত মানুষের মতো বুকের মধ্যে থাকে কুয়াশা,
অন্ধকার রাস্তা জুড়ে ছড়ানো থাকে চোরাবালি।
রাত সাড়ে দশটায় নিস্পন্দ গলিতে একলা দাঁড়িয়ে
মনগড়া কিছু সম্মোহন আর খোয়ারি সম্বলে
সস্তা সিগারেট টানা, সম্পর্ক হারিয়ে প্রতিদিন
একটা আলগোছে জীবন শেষ হয়ে আসে ক্রমে।
ডানহাতে ব্লেড ধরে বাঁ হাতের কবজিতে ছুঁয়ে
একেকটা উজান থেকে ভাঁটায় শীত এসে যায়,
সামনে ইলেকট্রিক চুল্লী পাতালে নামার সিঁড়ি-
সুতানুটি বুক ফুঁড়ে নির্বাসন কিংবা মুক্তি।
আমাদের সমবেত কান্নায় ভেসে যায় জনপদ
রাস্তা ঢেকে যায় মৃতদেহ ফুলে, উচ্ছন্নে যায় দুনিয়া
আমি আর রাতজাগা শব্দজাল পরস্পর প্রতিদ্বন্ধি-
দু’দিকে সমান ধাঁধাঁ আমার শরীরে বয়ে চলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন