বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুঃ শ্রদ্ধা ও স্মরণে
- বিমল মণ্ডল
পরাধীন ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার জন্য যাঁরা দেশ মাতৃকার উদ্দেশ্যে নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন, শহীদ হয়েছিলেন সেইসব শহীদদের অগ্রদূত হলেন বীর বালক ক্ষুদিরাম বসু।
ক্ষুদিরাম মাত্র ছয় বছর বয়সে প্রথমে মা কে এবং তার কয়েকমাস পরে বাবাকে হারান। বাবা - মা ছাড়া তিনি তাঁর দিদি অপরূপা দেবীর কাছে মায়ের স্নেহ ছায়ায় বড়ো হয়ে ছিলেন। গ্রামের পাঠশালায় তাঁর হাতে খড়ি হয়। পরে চলে যান তমলুকের হ্যামিলটন স্কুলে। তারপর মেদিনীপুরের কলেজিয়েট স্কুলে। সেখানে পড়তে পড়তে বিপ্লবী দলে যোগ দেন। ঐ সময়ে তিনি সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সান্নিধ্যে আসেন। তিনি ক্ষুদিরামের মধ্যে দেশাত্মবোধে জাগিয়ে তোলেন তারপর ক্ষুদিরাম বিপ্লবী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন।
ছবি ঋণ - Google
১৯০৫ সাল। তখন স্বদেশি আন্দোলনে বাংলা উত্তাল। দেশ মাতার বন্ধন মুক্তির আহ্বানে ক্ষদিরাম প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হয়ে পড়লেন।ফলে পড়াশোনা ছেড়ে ইংরেজ শাসন ও শোষনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেন। পরে এই নিয়ে দিদির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হয়।
১৯০৬ সাল। রাষ্ট্রদ্রোহমূলক পত্রিকা বিলির অপরাধে ক্ষুদিরাম পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। কিন্তু নাবালক বলে ছাড়ও হয়ে যান।
১৯০৮ সাল। সেই প্রতীক্ষিত দিন। সেই দিন ছিলো ৮ই এপ্রিল। অত্যাচারী বিচারক কিংসফোর্ডকে এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর উপর এই দায়িত্ব পড়লে তিনি বিপ্লবী প্রফুল্লচাকিকে সাথে নিয়ে বিহারের মজঃফরপুরে যান। ১৯০৮ সাল। ৩০শে এপ্রিল ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি লক্ষ্য করে তাঁরা বোমা ছোড়েন। ফলে গাড়ি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। কিন্তু সেই গাড়িতে কিংসফোর্ডের বদলে মারা গেলেন দুজন ইংরেজ মহিলা।
ছবি ঋণ- Google
১লা মে। ক্ষুদিরাম ধরা পড়লেন পুলিশের হাতে। বিচার হলো। বিচারে ফাঁসির আদেশ হলো। ১৯০৮ সাল। ১১ই আগস্ট মঙ্গলবার মজঃফরপুর জেলের ফাঁসির মঞ্চে ক্ষুদিরাম হাসি মুখে মৃত্যু বরণ করেন। গোটা ভারতবাসী সে দিন শোকে, দুঃখে কাতর হয়ে পড়েছিল। দেশকে স্বাধীন করার জন্য তাঁর যে অবদান তা ভারতবাসী চিরকাল মনে রাখবেন আমৃত্যু শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। তাই আজ সেই ১১ই আগস্ট। আমি একজন ভারতবাসী হয়ে তাঁর চরণে বিনম্র প্রণাম ও শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন