ভুল ধরে হিসাবের- ফুল ধরে গাছে,
পাক ধরে চুলে আর রাগ ধরে পাছে।
বলা ধরে কথা জোরে- গলা ধরে কে হে?
গান ধরে সুরেসুরে- প্রাণ ধরে দেহে।
খোকা ধরে বই আর পোকা ধরে দাঁতে,
ট্রেন ধরে দৌড়ে ও পেন ধরে হাতে।
সাধুবেশ ধ'রে বেশ চাঁদু থাকে সুখে,
কাকে ভূতে ধরে-কাকে রাখে ধ'রে বুকে!
ঘূণ ধরে কাঁচাবাঁশে- গুণ ধরে লোকে,
পেটে ধরে- হেঁটে ধরে- ধরে রোগে-শোকে।
দাম ধরে জিনিসের- নাম ধ'রে ডাকে,
মাথা ধরে রোদ্দুরে ছাতা ধরে টাকে।
ভুঁইয়ে ধরে নোনা আর উঁইয়ে ধরে কাঠও,
মত ধরে চলো আর পথ ধরে হাঁটো।
বনে ধরে আগুন ও মনে ধরে তারও,
দোষ ধরে- খোশ ধরে - জোশ ধরে আরো।
পায়ে ধরে- হাতে ধরে- গায়ে ধরে জ্বালা,
টান ধরে ভাটাতে ও কান ধরে কালা।
ধরাধরি দেখে এত- ত্বরা ধরি কষে-
ধরাবাঁধা গৎ-এ দাদা ছড়া ফাঁদি বসে।
মরাগাছে ছড়া নাচে
ভুল আছে হুল আছে
ফুল আছে তবু যে,
মরুদেশে তরুবেশে
মন আছে সবুজে।
ভীতি আছে ইতি আছে
প্রীতি আছে গোপনে,
কালোমাঠে ভালো হাঁটে
আলোবীজ রোপনে।
জরা আছে খরা আছে
ভরা আছে সরসে,
একা ঘরে দেখা করে
স্বপ্নেরা হরষে।
কাঁদা আছে বাধা আছে
সাধা আছে আদরে,
ঘৃণাপুরে বীণাসুরে
পাই প্রিয় স্বাদ ওরে।
ক্ষতি আছে যতি আছে
গতি আছে চরণে,
মরাগাছে ছড়া নাচে
প্রাণময় বরণে।
নাই আছে যাই আছে
পাই আছে ভিতরে,
ক্ষয়বুকে হয় সুখে
জীবনের জিৎ ওরে।
ছড়ার সাথে
ছড়ার সাথে দিবস-রাতে
খেলছি আমি নিত্য,
মেলছি ডানা তাইরে নানা
চুকিৎকিৎ কিৎ তো।
ডাকছি সুখে রাখছি বুকে
মাখছি মনে-অঙ্গে,
আঁকছি খাতার পাতায় পাতায়
রঙের অনুষঙ্গে।
উঠছি ভোরে ছুটছি জোরে
ধরতে চলার ছন্দ,
কুটছি মাথা বাড়িয়ে হাতা
খুটছি ছড়ার গন্ধ।
অন্ত্যমিলে মন তো নীলে
ভাসছে দিবারাত্রে,
হাসছে ছড়া আসছে ছড়া
শব্দনদী সাঁতরে।
ইচ্ছে হলেই দিচ্ছে টুকি
নিচ্ছে সুখই কত্তো,
পাচ্ছি মজা ছড়ার গজা
খাচ্ছি অবিরত্ত।
লিখছি ছড়া শিখছি ছড়া
পড়ছি ছড়ার মন তো
গড়ছি বাড়ি ছড়ার গাড়ি
চড়ছি অণুক্ষণ তো।
কূজন সুরে দু'জন উড়ে
বেড়াই ঘুরে সখ্যে,
এড়াই সকল নকল-ধকল
দুঃখ-ব্যথা-শোককে।
ছড়ার সাথে দিবস-রাতে
চলছে খেলা নিত্য,
ছড়াই আমার স্বপ্নখামার
বাঁচার-আশার ভিত তো।
শিশু মানে
শিশু মানে ফুল- গন্ধ চটুল
ভালবাসা-ভাষা আঁকা,
ভোরাই প্রাণের ওরাই তো হাসি
আলোআশা-রঙ মাখা।
শিশু মানে পাখি- স্বপ্নের আঁখি
আনন্দ-সুর তোলা,
ওদের জীবনবোধের কূজনে
দ্বন্দ্ববিহীন দোলা।
শিশু মানে বায়ু- হৃদয়ের আয়ু
অমল পরশ-ভরা,
বুকভরা সুখ-নিঃশ্বাস ওরা
দুখ বিষ-শ্বাসহরা।
শিশু মানে ছড়া- জরাহীন ধরা
প্রাণ-সুধারস ধারা,
ওদের ছন্দ-রোদের বোধনে
জেগে থাকে ঘর-পাড়া।
কথার কথা
মায়ের কথা যখন শুনি
গাঁয়ের কথা ভাসে,
মামার কথা শুনতে বসে
আমার কথা হাসে।
বাবার কথা ভীষণ ভারি
ভাবার কথা বটে,
ভায়ের কথা বাজলে কানে
নায়ের কথা রটে।
বোনের কথা দরদমাখা
মনের কথা বুঝি,
লোকের কথা শোনার পরে
ঝোঁকের কথা খুঁজি।
দাদার কথায় আঁধার কাটে
বাধার কথা ফেলি,
চাঁদের কথার জোছনা মেখে
সাধের কথা মেলি।
আলোর কথা শুনব বলে
কালোর কথা ঢাকি,
ছন্দমধুর তোমার কথার
গন্ধ ও সুর মাখি।
কাজের কথা শুনতে গিয়ে
লাজের কথা হাঁচে,
সুখের কথার উচ্ছ্বলতায়
বুকের কথা নাচে।
ফুলের কথার রঙ ও ঘ্রাণে
ভুলের কথা ভুলি,
নদীর কথার ছলাৎ শুনে
যদি'র কথা তুলি।
আঁখির কথার গোপন ভাষা
পাখির কথায় আঁকি,
অনেক আছে কথার কথা
ক্ষণেক শুনি তা কি?
পত্রিকার সবাইকে শুভেচ্ছা। ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন