----------------------------
বিভাসকান্তি মণ্ডল
----------------------------
নদী-মালার কাব্য
১.
উপকথা
ইছামতী বয়ে যাচ্ছে চিরাচরিত।
ধূসর বিকেল অবসন্ন নেমে আসে অবিরত।
একা একা!
নদীর নামে মায়া জাগে না।
ফসল চলে গেছে আমফানের আহ্বানে!
বিমর্ষ রাত শুয়ে থাকে ত্রিপলে ।
আঁধার রঙে ছেয়ে যায় নদী ও নারী!
পুরুষ বড়ো একাকী ।
উপকথারা মোহনার দিকে চলে গেছে।
হয়তো বা হারিয়ে গেছে নোনাজলে!
কথকতার সেই জাদুকর থাকলে,
বলে যেতো খাল-বিলের রূপকথা।
এখনো পলি সরালে মিলতে পারে,
বিগত শতাব্দীর গল্পের পসরা!
সেসব গাথার আজ প্রয়োজন বড়ো।
তোমাকে নিয়ে খুঁজতে যাওয়ার কথা ছিলো।
তুমি এলে না!
একাকী মানুষের কাছে রূপকথারা আসে না!
২.
নোঙর
নোঙর ফেলে ছিলে রূপনারায়ণে,
বুদ্ধের আকর্ষণে!
এপথ ভরে ছিলো তথাগতর বসনে।
সমস্ত বালিয়াড়ি ছিল সাঁচী স্তুপের আদলে!
মহাকাল স্মৃতি চিহ্ন রেখে স্মরণ কথার মালা বোনে।
কালিক মানুষ পুঁতি খুলেছে এক এক করে।
কেবল সুতোটা ঝুলে আছে এখন।
গেঁথে নিতে পারলে আবার জেগে উঠবে তাম্রলিপ্ত বন্দর!
নোঙরটা এখনো আছে ।
নৌকা ভেসে গেছে সাগরের জলে!
৩.
হারানো ইছামতী
ইছামতী হারিয়ে গেছে আজ জনারণ্যে
কস্তুরীমৃগের অলৌকিক সুবাসও
মহানগরের কোথায় স্থিত হয়েছো
জানা নেই বলে উড়িয়ে দিলাম অক্ষর
না বাতাসে, না জলে...
বাতাস তো নেই, ইথার তরঙ্গ
জলও নেই, শুধু ধূ ধূ বালি
হারিয়ে গেছে ইছামতী!
৪.
সরস্বতী দিদি ও ইছামতী/১
সরস্বতী দিদির জলাভূমিতে এখনো সন্ধ্যা নামে
সিঁদুর ছড়িয়ে পড়ে পুকুর ঘাটে
শাপলা শালুকের চোখ বুজে আসে
সেই বাসরে অনিদ্রার ঘুম নেমেছিল চোখে
যন্ত্রণাদের চুপি চুপি মহানগরে রেখে
পুনরায় মহানগরের করাল করতলে
মেঘ-বিকেল ও বর্ষা-রাতের ছবি বিবর্ণ হয়ে গেছে
স্মৃতির ভেলা তো ইছামতী পেরিয়ে মহাসাগরে
লখিন্দরের মতো সে ভেলাতেই ভেসে আছি
অদ্যাবধি।
৫.
সরস্বতী দিদি ও ইছামতী /২
সরস্বতী দিদি কেমন আছে?
গিয়েছো তার কাছে!
ইছামতী ডাকেনা আর
তোমার নিঝুম রাতে!
রাত কী তোমার নিঝুম হয়!
কুয়াশা দেখো আর ?
মহানগরে যাওয়ার সময়
খুলে গেছো সব ভার!!
অপ্রকাশিত যে কোনো লেখা পাঠান
আপনার অভিমত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন