অজ্ঞাতবাস
কি দারুণ নিশ্চয়তায় হিংসা ও প্রেম
একত্র বসত করে সূর্যোদয় সত্যের মতো,
মানুষের ভেতর !
অবাক করার মতো কি এমন ব্যবস্থা
পৃথিবীতে আছে ? যতটা অজ্ঞাত বিস্ময়ে
সময় কাটাতে হয় নিজের সঙ্গে।
এগিয়ে যায় পা, দু-পা ফেলে
পিছিয়ে আসে পা, দু-পা ফেলে
কেন যায়, কেনই বা আসে
সেটাই আশ্চর্য অপার।
আজন্মকাল নিজের ভেতরকার
এই জটফেরের সমাধান
আজও হয়নি, কেউ কখনো পেরে ওঠে
বিশ্বাসও হয় না। চির অজ্ঞাত বিস্ময়ে
থেকে গেছে মানুষের মন।
প্রান্তরেখা
অবেলার বৃষ্টি রসে ভুগছে
অপেক্ষার পাকাধান,
কান্নার সাদা অঙ্কুরে জড়িয়ে থাকে
সমব্যথী কৃষকের বিপন্ন মায়া।
এই ঘাসবীজ বাড়ি এলে তবেই না
সোজা থাকে পৃথিবীর মেরুদণ্ড ?
কষ্ট এখন অলংকার
বিদ্যুত বৃষ্টি বজ্র ভাইরাস সামলে
ললাটে এঁকে দেয় বিজয়ী ইস্তাহার,
শেষাবধি কেউ থাকুক বা না থাকুক
সব পেরে ওঠার উত্তরাধিকার নিয়ে
থেকে যাবে শ্রম ও শ্রমের মানুষ।
আশ্রয়
গোপনীয়তায় খুব বেশি আগ্রহ নিয়ে
কিছু ভেঙে পড়া ঘটনা চিরকাল
নিঃশব্দে থেকে যেতে চায়।
দিন শুরুর সঙ্গে মিশে থাকে পাখির গান
ফুল ফোটা, রোজনামচায় অনিচ্ছের
ধূসর মরচে, অশ্রু-আনন্দ একাকার
আশ্রয় চেয়ে পথে বেরিয়ে আসা স্বভাব
জেনে বুঝে কার কাছে কেন ফিরে যাবে ?
বরাদ্দের বাইরে থেকে যাওয়া হিসেব
চিরকাল পরার্থে ছায়াতরুই হয়।
বালিশ ভাষ্য
তখনো বালিশে লেগে
ব্যর্থ স্বপ্নের কয়েক কণা
যা নয় তাই ভেবে সাজানো ঘর
ভোরের রেখায় মুছে যেতেই
পায়ের পাতায় জমতে থাকে
বরাদ্দ কক্ষপথ পরিক্রমার জোর
দেশ রক্ষার নক্সা তৈরি
কি এমন কঠিন ?
বালিশের সারাংশটুকু কবিতায় ফিরে আসে:
যোগ্য মানুষের দাম যেখানে লঘু
টাকার দাম সেখানে গুরু !
এর সমতাই দেশরক্ষার বড় ওষুধ।
বারান্দা
আমাদের আড্ডার ভেতর জায়গা করে নেয় জ্যোৎস্নার কালচে ঠোঁট, জানলার উদাসে
লেগে থাকা সান্ধ্য হাওয়ার প্রশ্রয়
আর এক দিঘি আকাঙ্ক্ষার ভেতর
অনন্ত নৌকো।
দীর্ঘ চঞ্চলতায় সানাইয়ের ওম,
যেখানে সমর্পণের ইচ্ছেরা
মেঘমুক্তির ধারাপাত সাজায়...
ডাকের অভিনব কোলাজে এসে দাঁড়ালে
অন্ধকারে তখন সব ভয় তারা হয়ে যায়।
বুকের ওপর গড়িয়ে পড়ে মাথা,
পূবে-পশ্চিমে বেজে ওঠে শঙ্খ রাগের ফুল, শরীরের পঞ্চপীঠে অনর্গল
কথা বলে চলেন ঈশ্বর আলো।
জোনাক অক্ষরে কবি তখন
পাণ্ডুলিপি সাজায়, স্রোতের ইচ্ছায়
মাছেরা কেমন শহিদ হতে থাকে।
লেখা পাঠান
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন